ইসি-ইউএনডিপির চুক্তি সই
‘ব্যালট প্রকল্পে’ ২ মিলিয়ন ডলার দেবে অস্ট্রেলিয়া

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৭:২২

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউএনডিপির অর্থায়নে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাস্তবায়নাধীন ‘ব্যালট প্রকল্পে’ আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বুধবার (১৮ জুন) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মুদ্রায় দুই মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইসি গঠনের পর থেকেই ইউএনডিপির সহায়তা চেয়ে আসছি। তারা প্রথম থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেন। ব্যালট প্রজেক্টে মোট ১৮ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে।
তিনি জানান, নির্বাচনের জন্য ১৬টি কমপোন্টেট আছে। এরমধ্যে অর্থায়নের বিষয়ে ইউএনডিপির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া দুই মিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই প্রকল্পে ভবিষ্যৎ অর্থায়নের জন্য দাতাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জানিয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, এই প্রজেক্টের আওতায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, অ্যাওয়ারনেস, ট্রেনিং, ইনস্টিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্কসহ মোটাদাগে ১৬টি কম্পোনেন্টে পরিচালিত হবে। আশা করি বেস্ট ইউটিলাইজেশন হবে।
আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরা, অফিস মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এ প্রকল্পের আজ এমওইউ হয়েছে।
এসময় হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং অংশীদার। বাংলাদেশ যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে অগ্রসর হতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করার সুযোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা সংস্কার কমিশনের পাঁচজন কর্মকর্তাকে অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, যেন তারা ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যুর বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে এবং ধারণা পেতে পারেন। আমরা আনন্দিত যে, নির্বাচন কমিশনের ‘ব্যালট প্রকল্পে’ সরাসরি সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিচ্ছি।
‘নির্বাচিত সরকারের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেসকো এবং ইউএন উইমেন-এর সঙ্গে যৌথভাবে এ প্রকল্পটি স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের ক্ষুদ্র অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত’- যোগ করেন তিনি।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার জানান, গত বছর বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের কিছুদিন পরেই তারা জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়তা চায়। এরপর জাতিসংঘ একটি ‘নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন’ পাঠায়, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে এবং জাতিসংঘ কী ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে, তার সীমারেখা নির্ধারণে কাজ করে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে এই সুপারিশগুলো একটি প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার এ প্রকল্পটি রেকর্ড সময়ে অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ, নির্বাচন কমিশন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে এবং আমরা গর্বিত যে আজ অস্ট্রেলিয়া এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রথম দাতা ও অংশীদার হিসেবে এগিয়ে এসেছে।
স্টেফান লিলার আরও বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেসকো এবং ইউএন উইমেন। অস্ট্রেলিয়াই প্রথম দেশ, যারা এর পেছনে সরকারের ও করদাতাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমরা অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি,অন্যরাও এগিয়ে আসবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে।
এসআইবি/এমআই