নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ম্যুরাল ভাঙায় ১২০ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের প্রতিবাদ

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৬:৪৯
-6853eb3dc5aaf.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ম্যুরাল প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ভাঙার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, গবেষক, সাংবাদিক, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ১২০ জন সংবেদনশীল নাগরিক।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, এ ধরনের একটি শিল্পকর্মের ধ্বংস-সাধন বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও মানবিক চেতনায় সরাসরি আঘাত।
বিবৃতিতে জানানো হয়, শিল্পী মণীন্দ্র পালের নির্মিত ম্যুরালটি প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদের নাচের ভঙ্গিমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছিল। এটি ছিল কেবল একটি শিল্পকর্ম নয়— বরং নারীর শক্তি, সৃজনশীলতা এবং মানবিক উৎকর্ষের প্রতীক। এ ধরনের সৃজনশীল নিদর্শন ভেঙে ফেলা অসহিষ্ণু ও প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি দেশে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত আক্রমণ বাড়ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, প্রগতিশীল চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষতার ধারক শিল্প-স্থাপনা— এমনকি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারি বাড়িও এই অপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পায়নি। এসব অপতৎপরতা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
এ ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘অপরাজনীতি ও ধর্মের নামে বেড়ে ওঠা উগ্রবাদই এসব ঘটনার পেছনে সক্রিয়। এই প্রবণতা চলতে থাকলে আমরা প্রগতিশীল ও সহনশীল জাতি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে পিছিয়ে পড়ব।’
১২০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, কথাসাহিত্যিক, কবি, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, গবেষক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার, আবৃত্তিশিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, সমাজকর্মী, প্রকাশক ও শিক্ষাবিদ— তারা সকলেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দেশে মানবিক ও সাংস্কৃতিক সহনশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা হলেন : (তালিকা জেষ্ঠ্যতার ক্রমানুসারে নয়) কথাসাহিত্যিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক খান; কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার; কবি, শিশুসাহিত্যিক ও অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন; কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল; কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন; অনুবাদক ও অধ্যাপক জি এইচ হাবীব; কবি ও সংগঠক সালাহউদ্দিন বাদল; কবি, লেখক ও গবেষক সরকার আবদুল মান্নান; কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ; কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আজয় দাশগুপ্ত; লেখক ও বিজ্ঞানী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী; গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম; কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. মুকিদ চৌধুরী; কবি ও সাংবাদিক জুয়েল মাজহার; কবি ও মুক্তচিন্তক শাহেদ কায়েস; কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদ; কবি, কথাশিল্পী ও বাচিকশিল্পী রবিশঙ্কর মৈত্রী; লেখক ও চলচ্চিত্র গবেষক বিধান রিবেরু; কথাশিল্পী হামীম কামরুল হক; কবি ও কথাসাহিত্যিক সন্তোষ রায়; কবি ফকির ইলিয়াস; কবি ও চলচ্চিত্র শিক্ষক সাকিরা পারভীন; কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. মাসুদ পথিক; কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহউদ্দিন; কবি ও সাংবাদিক নওশাদ জামিল; কবি রিমঝিম আহমেদ; কবি তুষার গায়েন; কবি সাইয়্যিদ মঞ্জু; কবি ও সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম; কথাসাহিত্যিক মোজাম্মেল হক নিয়োগী; কথাশিল্পী মনি হায়দার; কথাশিল্পী স্বকৃত নোমান; কথাশিল্পী ও গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস; কথাসাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল ইমরান; কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক হামিম কামাল; কবি ও সাংবাদিক গিরীশ গৈরিক; কবি আহমেদ শিপলু; কবি ও চিত্রশিল্পী রিঙকু অনিমিখ; কবি ও গল্পকার মোহাম্মদ আন্ওয়ারুল কবীর; সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দীপংকর দীপক; কবি ও সংস্কৃতি কর্মী আরিফ নজরুল; কবি ও সম্পাদক সরকার আজিজ; কবি সিকতা কাজল; কবি ও প্রাবন্ধিক জাহাঙ্গীর হোসেন; কবি ও সংস্কৃতিকর্মী দেলওয়ার এলাহী; কবি শফিক সেলিম; কবি নাসরীন হক; কবি নাদিম মাহমুদ; কবি বিনয় কর্মকার; কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলি; কবি কাঙাল শাহীন; কবি সমর চক্রবর্তী; কবি বীরেন মুখার্জী; কবি মাসুদার রহমান; কবি খালেদ সরফুদ্দীন; কবি ও সংগঠক বুলবুল ইসলাম; কবি ও অধ্যাপক পরিতোষ হালদার; কবি ও সাংবাদিক অচিন্ত্য চয়ন; কবি চন্দন চৌধুরী; কবি মামুন খান; কবি ও প্রাবন্ধিক আসাদ উল্লাহ; কবি লতিফ জোয়ার্দার; কবি সাফিনা আক্তার; কবি ও সাহিত্যিক টিপু সুলতান; কবি ও সাংবাদিক ফারুক আফিনদী; কবি ও আইনজীবী ইসমত শিল্পী; শিশুসাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালী; সাংবাদিক ও শিশুসাহিত্যিক আপন অপু; ছড়াকার ও সাংবাদিক সৈয়দ হিলাল সাইফ; কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক শামস সাইদ; কথাসাহিত্যিক রাশেদ রেহমান; কথাসাহিত্যিক আরিফুর রহমান; কথাসাহিত্যিক ও ছোটকাগজ সম্পাদক শফিক হাসান; কথাসাহিত্যিক শাহমুব জুয়েল; কথাশিল্পী ম্যারিনা নাসরীন; কথাসাহিত্যিক সোহরাব সুমন; কথাশিল্পী হামীম ফারুক; কথাশিল্পী ও সাংবাদিক সিরাজুল এহসান; কবি জিয়াবুল ইবন; সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মহসীন হাবিব; কথাশিল্পী স্বরলিপি; কথাশিল্পী আনিফ রুবেদ; কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আজহারুল হক ফরাজী; সাংবাদিক আফরোজা সুলতানা চৈতী; সাংবাদিক হাবীব ইমন; লেখক ও গবেষক সোহেল মাজহার; লেখক ও গবেষক প্রবীর বিকাশ সরকার; লেখক ও প্রকাশক সাহস রতন; সাংবাদিক মহিউদ্দিন আহমেদ; লেখক-সাংবাদিক ও প্রকাশক মেহেদী হাসান শোয়েব; লেখক-গবেষক ও প্রকাশক অজয় কুমার রায়; লেখক-গবেষক ও সম্পাদক সাদাত উল্লাহ খান; লেখক ও সাংবাদিক মরিয়া সালাম; লেখক ও সাংবাদিক মানিক মোহাম্মদ ওমর; লেখক ও সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন তৌহিদ; লেখক ও সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম নিরব; সংগঠক ও সমাজচিন্তক রাফায়েত চৌধুরী; আবৃত্তি শিল্পী সাবিনা নীরু; আবৃত্তি শিল্পী ও সংগঠক স্বাধীন মজুমদার; মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও সাংবাদিক মোস্তফা হোসেইন; বিজ্ঞান লেখক আব্দুল গাফফার রনি; সাংবাদিক ও আলোকচিত্রকলার শিক্ষক সুদীপ্ত সালাম; গীতিকার ও সুরকার শেখ সাইফুল্লাহ রুমী; অ্যাকটিভিস্ট সারোয়ার সবুর; অ্যাকটিভিস্ট তুষার আহমেদ; সমাজসেবী সরদার রিহান; সমাজকর্মী মোল্লা হাছানুজ্জামান টিপু; সমাজসেবক গৌরী রায়; সমাজসেবী তমাল চন্দ্র বর্মণ; অভিনেতা নিরঞ্জন নিরু; কবি শহীদুজ্জামান ফিরোজ; কবি শুভ্র বিশ্বাস; লেখক সেলিম আহমেদ খান; লেখক শোয়েব ইবনে শাহীন; কবি আতিয়ার রহমান; কবি ও সংগঠক অরুপ কুমার বড়ুয়া; লালনসংগীত শিল্পী অনামিকা রিতা; কবি ও ছড়াকার নুরউদ্দিন শেখ; কবি ও কথাশিল্পী নাহার মনিকা; গবেষক মনিস রফিক।
বিবৃতিটি যৌথভাবে পাঠান কবি ও সাংবাদিক গিরীশ গৈরিক এবং কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক শামস সাইদ।
এইচকে/এমএইচএস