Logo

জাতীয়

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ

ইসিতে বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১১:৪৯

ইসিতে বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুর্নবিন্যাস নিয়ে কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ উপলক্ষে বিভিন্ন আসনের সীমানা বহাল ও পুনর্বহাল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির একডজন নেতা। এদের মধ্যে বেশিভাগই ২০০১ সালের সংসদীয় আসন পুনর্বহাল চেয়ে আবেদন করেছেন।

কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী। কুমিল্লা-২ আসন নিয়ে আবেদন করেছেন কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া।

মুন্সিগঞ্জের চারটি পুরোনো আসন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ স্থানীয় নেতারা। মানিকগঞ্জের চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে আবেদন করেছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা।

এ ছাড়া কুমিল্লা-১ আসনের জন্য আবেদন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন এবং ফরিদপুরের একটি আসনের জন্য আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল।

বেশিভাগ ক্ষেত্রেই আবেদনকারীরা দাবি করছেন, তারা বিএনপির হয়ে নয়, স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এসব দাবি উপস্থাপন করছেন।

আসন পুর্নবহাল চেয়ে আবেদন করা কুমিল্লা- ৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনি আসন ছিল আমরা সেভাবে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছি। একইসঙ্গে আমরা কমিশনের কাছে খসড়া তালিকা প্রকাশের জন্য আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন আমাদের জানিয়েছে, তারা কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের আশা পূরণ হবে।

মুন্সিগঞ্জের চারটি আসন পুনর্বহাল চেয়ে আবেদন করা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ২০০১ সালে আমরা আসনভিত্তিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এবারও ঠিক সেভাবে এলাকাভিত্তিক আসনগুলো যেন পুনর্বিন্যাস করা হয়, আমরা এ দাবি জানিয়েছি।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৩০০ আসনের মধ্যে ৭৬টি আসনের বিষয়ে একাধিক পক্ষ থেকে আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-১, ঢাকা-২, কুমিল্লা-১০, বরগুনা-১, বরগুনা-২ ও পিরোজপুর-২ আসন থেকে এসেছে সবচেয়ে বেশি আবেদন।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন বড় ধরনের সীমানা পরিবর্তন করে। ১২৯টি আসনের সীমানায় রদবদল এনে ঢাকায় আসন বাড়িয়ে বিভিন্ন জেলায় আসন কমিয়ে আনা হয়। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, তখন একেকটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ভাগ হয়ে দুটি আলাদা আসনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। শত শত অভিযোগের পরও সেগুলো আমলে নেয়নি তৎকালীন এক-এগারো সরকারের সময়কার নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বলছে, ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিশেষ কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ করা হয় ২০০৮ সালে। এসময় জাতিসংঘের সহায়তায় একজন আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারক বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দিয়ে একটি গবেষণা করা হয়, যদিও ওই গবেষণার সকল পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি।

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ৭৬টি আসনের বিষয়ে ইসি আবেদন পেয়েছে। এখানে একই আসনে বর্তমান সীমানা রাখার পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক আবেদনও আছে। এগুলো পর্যালোচনা করে জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রশাসনিক সীমানা বিবেচনায় নিয়ে যেগুলো যৌক্তিক মনে হবে, ইসি সেটাই করবে। এটি পর্যালোচনা পর্যায়ে আছে। ৩০০ আসনের সীমানাই পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না— এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা ভৌগোলিক অবস্থান, আয়তন ও জনসংখ্যা দিয়ে জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) পদ্ধতিসংক্রান্ত অ্যাপ দিয়ে তথ্য যাচাই করেছি। এ পদ্ধতিতে কিছুটা অসঙ্গতি মনে হয়েছে। তাই এবার আসনওয়ারি ভোটার সংখ্যা দিয়ে আরেকটি পর্যালোচনা করে দেখছি। সব দিক বিবেচনা করে সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

  • এসআইবি/এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সংসদ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন বিএনপি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর