Logo

জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন আজ

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ০৮:৪৭

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন আজ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন শনিবার (২৮ জুন)। ১৯৪০ সালের এ দিনে তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ দেড় দশক ধরে বিশ্বজুড়ে দিনটি পালন করা হয় ‘সামাজিক ব্যবসা দিবস’ হিসেবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, ড. ইউনূসের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি কোনো কর্মসূচি নেই। সরকারি পর্যায়ে জন্মদিন উদযাপন হবে না।

এর আগের দিন শুক্রবার ঢাকার সাভারে জিরাবো সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনব্যাপী ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে ২০২৫’-এর উদ্বোধন করেন ড. ইউনূস নিজেই। তবে এ আয়োজনেও তার জন্মদিন ঘিরে কোনো আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায়নি।

ড. ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী। দারিদ্র্য বিমোচনে জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালু করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও সম্মিলিতভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করে।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ করা হয়। প্রায় একযুগ ধরে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনার মুখে ছিলেন এবং একাধিক মামলায় জর্জরিত হন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শ্রম আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।

তবে গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। এরপর অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের অনুরোধে ড. ইউনূস ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিধ্বস্ত অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা ও জনপ্রশাসনে সংস্কারই তাদের মূল লক্ষ্য।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দুলা মিঞা সওদাগর ছিলেন একজন মহুরী ও মাতা সুফিয়া খাতুন গৃহিণী। সহধর্মিণী অধ্যাপক দিনা আফরোজ। তাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।

ছাত্রজীবন থেকেই মেধাবী মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৫৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ৩৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬তম স্থান অধিকার করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম কলেজে এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।

মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৬৫ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তিনি ১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি মিডিল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। একই বছর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে মার্কিন মাটিতে নাগরিক কমিটি গঠন করে তথ্য প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। তিনি দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মাঠে নামেন। তার উদ্যোগে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প’ চালু হয়। দারিদ্র্য-পীড়িত মানুষের কাছে ক্ষুদ্রঋণ পৌঁছে দেওয়ার এ মডেলটি ১৯৮৩ সালে পূর্ণাঙ্গ গ্রামীণ ব্যাংক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে বিস্তৃত। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে এ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে। ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এ সম্মান অর্জন করেন।

পাশাপাশি ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর