প্রবাসী ভোট
পোস্টাল ও অনলাইন ভোটে মত রাজনৈতিক দলগুলোর
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১১:২২
---2025-06-30T112015-68621f1780c33.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতির চেয়ে পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন পদ্ধতির দিকেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও শুরুতে কমিশন ‘প্রক্সি ভোটিং’কেই সহজ ও কার্যকর মনে করে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছিল, তবে অধিকাংশ দল সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যকরে ২৪টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে মাত্র ৮টি দল ‘প্রক্সি ভোটিং’-এর পক্ষে মত দিয়েছে। বিপরীতে, ১৮টি দল অনলাইন এবং ১৫টি দল পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতির পক্ষে মত জানিয়েছে। অনেক দল একাধিক পদ্ধতির পক্ষে সুপারিশ করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি শুধুমাত্র পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থার পক্ষে সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল অনলাইন ও পোস্টাল উভয় পদ্ধতির পক্ষেই মত দিয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের মতামত, উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ এবং কারিগরি দিক বিবেচনায় এখন ‘আইটিভিত্তিক পোস্টাল ব্যালট’ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে কমিশন। এ পদ্ধতিতে প্রবাসী ভোটাররা অনলাইনে নিবন্ধন করে ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।
প্রস্তাবিত মডেলে, বিদেশে অবস্থানরত ভোটাররা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করবেন। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের নাম সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ‘প্রবাসী ভোটার’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এরপর পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট গ্রহণ করা হবে এবং তা নির্বাচনের দিন গণনায় যুক্ত হবে।
একজন প্রবাসী ভোটার অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার পর নির্বাচনের সময় দেশে এলেও কেন্দ্র গিয়ে ভোট দিতে পারবেন না। একই ব্যক্তি যেন দুইবার ভোট না দিতে পারেন, সে লক্ষ্যেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে ডাক বিভাগ এবং বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, পোস্টাল ব্যালটে জনপ্রতি খরচ পড়তে পারে ৪০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। ডাক বিভাগের মাধ্যমে খরচ কম হলেও সময় ও কভারেজে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অন্যদিকে, ফিডেক্স ও ডিএইচএল গোপনীয়তা বজায় রেখে ব্যালট পৌঁছানো ও ফেরত আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি।
এ পদ্ধতি চালুর জন্য আরপিও এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংশোধনের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। সংশ্লিষ্ট খসড়া ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি সীমিত পরিসরে অনলাইন ভোটিং পদ্ধতিও পরীক্ষামূলকভাবে চালুর বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতি রয়েছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আলোচনা চলছে, যদিও এখনো নির্ধারিত দিন ঘোষণা করেনি ইসি। বিশ্বজুড়ে দেড় কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের একটি বড় অংশ ভোটার হলেও এতদিন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারে গঠিত কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আগ্রহে এবার সেই বাধা কাটিয়ে এক নতুন পথচলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
প্রবাসীদের ভোট গ্রহণের বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, অংশীজনদের মতামত বা পরামর্শ পর্যালোচনা করে প্রবাসীদের ভোট গ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।বিষয়টি পর্যালোচনায় থাকায় এর বেশি কিছুই বলা যাচ্ছে না।তবে প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
- এসআইবি/এমআই