জলমহালের অধিকার মৎস্যজীবীদের : মৎস্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ২০:৪৯
-686a8cfb60743.jpg)
জলমহাল কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এর প্রকৃত অধিকার মৎস্যজীবীদের—এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীরা যেখানে আছেন, সেখানেই থাকবেন। জলমহালের অধিকার তাদেরই। প্রকল্প থাকুক বা না থাকুক, জলমহাল ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত স্থানীয় মৎস্যজীবীদের।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি এলাকায় সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, সঠিকভাবে পুকুর খনন করে মাছের পোনা ছাড়লে শুধু স্থানীয় চাহিদাই নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও মাছ সরবরাহ করা সম্ভব। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি শুধু মাছের উৎপাদন নয়, বরং মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদি রূপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যতে এর সম্প্রসারণ হবে কি না। সুফলভোগীরা কীভাবে মাছের রেণু ছাড়তে হয়, পরিচর্যা করতে হয়—তা শিখছেন। এতে তারা নিজেরাই মাছ উৎপাদনে দক্ষ হয়ে উঠছেন এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তিনি বলেন, মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে মাঠপর্যায়ে আরও আন্তরিক ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহীনূর রহমান, জয়সাগর দীঘির সুফলভোগী মো. বাকি বিল্লাহ, মাধবগাড়া পুকুরের সুফলভোগী মায়া রাণী এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিশেষ সেলের কেন্দ্রীয় সদস্য হুযাইফা সম্রাট রাব্বি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. হেমায়েত হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ, মৎস্য অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও সুফলভোগীরা।
আলোচনা সভা শেষে উপদেষ্টা জয়সাগর দীঘিতে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং প্রকল্পের আওতায় গড়ে তোলা মৎস্য হ্যাচারি পরিদর্শন করেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিভাগের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার চারটি উপজেলায় বাস্তবায়িত সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বর্তমানে ৭৭৯টি পুকুরে মোট ১০ হাজার ৫০০ জন সুফলভোগী যুক্ত রয়েছেন। প্রকল্পটি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
এমএইচএস