‘অকাল মৃত্যু ঠেকাতে তামাক আইনের সংস্কার জরুরি’

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬:০৯

দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। এ অকাল মৃত্যু রোধে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংস্কার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ১৯ তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা। শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ মতামত দেন।
বক্তারা বলেন, তামাক হৃদরোগ, ক্যানসারসহ অসংক্রামক রোগের প্রধান কারণ এবং এসব রোগ দেশের মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী। শক্তিশালী আইন ব্যতীত ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক তামাক ব্যবহার করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০২২ সালে এফসিটিসির আলোকে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নেয়, যেখানে ধূমপানের জন্য পাবলিক প্লেসে নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান বিলুপ্ত, তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন ও খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধ, ই-সিগারেট, ভ্যাপিং ও হিটেড টোব্যাকো পণ্যের উৎপাদন-আমদানি-বিক্রয় নিষিদ্ধসহ গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংস্কার ঠেকাতে কোম্পানিগুলো রাজস্ব হ্রাস, কর্মসংস্থান হারানো, ধূমপান বৃদ্ধি প্রভৃতি অসত্য তথ্য ছড়িয়ে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের পরে এবং ২০১৩ সালে সংশোধনের পরবর্তী অর্থবছরগুলোতে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
স্মোকিং জোন পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে জনগণকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে না, এ কারণে ইতোমধ্যে ৭৯টি দেশ স্মোকিং জোন বাতিল করেছে । তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ভেপিং আসক্তি ঠেকাতে শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ ৪২টি দেশ এসব পণ্য বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। সহজলভ্যতা কমাতে বিশ্বের ১১৮টি দেশ সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রয় বন্ধ করেছে।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, শক্তিশালী আইন তামাক ব্যবহার কমাতে পারে, এটা ব্রাজিল, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তামাক কোম্পানির কূটকৌশলে বিভ্রান্ত না হয়ে দ্রুত আইন সংস্কার করার আহ্বান জানান তারা।
অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা), এইড ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বিসিসিপি, বিইআর, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ডাস্, ডর্প, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, মানস, নারী মৈত্রী, নাটাব, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, পিপিআরসি, প্রত্যাশা, তাবিনাজ, টিসিআরসি, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং প্রজ্ঞা সম্মিলিতভাবে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।
এসআইবি/এটিআর