চার হাজার কোটির ‘ম্যুরাল উৎসব’
মুজিববর্ষে ব্যয়ের খতিয়ান চাইল দুদক

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৬
-(38)-687ddfd192bf5.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পালিত হয়েছিল মুজিববর্ষ (শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী)। দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের পাশাপাশি নির্মিত হয় ১০ হাজারেরও বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য। ইতোমধ্যে এই ব্যয় ঘিরে উঠেছে প্রশ্নের ঝড়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিপুল অর্থ অপচয়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে সারা দেশে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি ৬৪টি জেলা পরিষদ বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি। চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে—মুজিববর্ষ পালনে কোন জেলায় কত টাকা ব্যয় হয়েছে, কোন মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়েছে, কে বা কারা এই ব্যয়ে যুক্ত ছিলেন, কতগুলো ম্যুরাল নির্মিত হয়েছে এবং প্রকল্পভিত্তিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয়।
দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মিত দশ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্যের নির্মাণ ব্যয় নিয়েই সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে।
দুদক বলছে, এসব প্রকল্পের রেকর্ডপত্র, প্রকল্প অনুমোদনের কাগজপত্র ও সম্পন্ন ব্যয়ের নথি পর্যালোচনা একান্ত জরুরি।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিযোগ রয়েছে। এই ব্যয়কে কেন্দ্র করে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে একটি উচ্চপদস্থ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মুজিববর্ষে অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে দুদক। তারা জেলা পর্যায়ে ম্যুরাল প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের খতিয়ে দেখছে।
এদিকে দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকায় জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পভিত্তিক নথিপত্রের সত্যায়িত কপি পাঠাতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও একই বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত আগস্ট এবং চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দুদক জানিয়েছিল, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি অর্থ ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে তারা মাঠে নামবে। এবার সেই উদ্যোগ বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
এনএমএম/এএ