প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও পাইলট-প্রশিক্ষকের সমন্বয়হীনতায় বিমান দুর্ঘটনা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ২১:৫৩

ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সাইরেন বাজিয়ে পৌঁছে যায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দল।
বড় ধরনের এই বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে দুটি সম্ভাব্য কারণের কথা বলছেন বিমান বাহিনী সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি।
বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল পুরোনো মডেলের। উড্ডয়নের পর থেকেই এর নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দেয়।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমানগুলোর যন্ত্রাংশ অনেক সময় আচমকা বিকল হয়ে যেতে পারে। এই বিমানটিরও মাঝ আকাশে এমনই কিছু ঘটেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত রয়েছে সমন্বয়হীনতা। প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণরত পাইলটের মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিমান বাহিনী সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
কর্মকর্তা পর্যায়ের একটি সূত্র বাংলাদেশের খবরকে জানায়, বিমানটি তখন একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। বিমানে থাকা প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণরত পাইলটের মধ্যে কমিউনিকেশন বিভ্রাট ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে যদি দুই পাইলটের মধ্যে সঠিক বোঝাপড়া না থাকে, তাহলে তা শুধু ঝুঁকিপূর্ণ নয়, মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
দুর্ঘটনার পর আহত দুই পাইলটকে দ্রুত উদ্ধার করে সিএমএইচে পাঠায় উদ্ধারকারী দল। দুর্ঘটনা কবলিত এলাকাটি ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিতে মোতায়েন করা হয় ৩ প্লাটুন বিজিবি। আকাশপথ সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রিত রাখে বিমানবাহিনী।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব জানিয়েছেন, এ ঘটনায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
বিমান দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। ইতোমধ্যে ব্ল্যাক বক্সও উদ্ধার করেছে বিমানবাহিনী-যার ভিত্তিতে বিস্তারিত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে বিমান বাহিনী সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
তবে এখনি কেন প্রশ্ন উঠছে পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে- এমন প্রশ্নে বিমান বাহিনীর ওই সূত্রটি বাংলাদেশের খবরকে জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানগুলোর একটি বড় অংশ অবসরের উপযোগী হয়ে উঠেছে। বাহিনীর অভ্যন্তরীণ একাধিক রিপোর্টেও তা উল্লেখ করা আছে।
২০১৯ ও ২০২২ সালেও দুটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু গভীর সংস্কার বা প্রতিস্থাপন হয়নি। যার কারণে আজ এমন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
- এনএমএম/এমআই