উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত
সাড়ে ১২টার মধ্যে কেউ কথা না বললে সড়ক অবরোধ

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১২:১৫

ছবি : বাংলাদেশের খবর
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে কলেজের গোল চত্বরে ৬ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমাদের আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান আপসহীন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দুপুর সাড়ে বারোটার মধ্যে তাদের সঙ্গে যদি সরকারের প্রতিনিধি দল তাদের দাবি দাওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলতে না আসে, তাহলে তারা উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করবে।
তারা বলেন, আমরা বুঝতে পারছি সরকার আমাদের কথা শুনবে না। আমরা সরকারকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিতে চাই, তারা যদি এর মধ্যে আমাদের সঙ্গে এসে কথা না বলে, তাহলে আমরা রাস্তা অবরোধ করবো। আমরা রাস্তা অবরোধ না করলে সরকার আমাদের কথা শুনবে না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি হচ্ছে। এক শিক্ষার্থী বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে যে ২৭ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, এটা সঠিক নয়। তার দাবি, এই সংখ্যা একশ প্লাস।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা—
১. নিহতদের সঠিক নাম ও তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
২. আহতদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
৩. শিক্ষকদের গায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাত তোলা— এই জঘন্য ঘটনার জন্য জনসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমাচাইতে হবে।
৪. নিহত প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিবারকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫. বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্লেনগুলো বাতিল করে আধুনিক প্লেন চালু করতে হবে।
৬. বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিবর্তন করে আরও মানবিক ও নিরাপদ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১টার পর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে মুহূর্তেই বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সবশেষ, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বার্ন ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানান, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু।
এ সময় হাসপাতালে অযথা ভিড় না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সায়েদুর আরও বলেন, রক্তের জন্য পর্যাপ্ত ডোনার আছে। অযথা কেউ ভিড় করবেন না। তবে, নেগেটিভ গ্রুপের আরও কিছু রক্ত লাগবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
- ডিআর/এটিআর