উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৬

সোমবার মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের পর উদ্ধার কাজে সেনা সদস্যরা | ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় বার্ন ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয় তার। নিহতের নাম আয়মান রহমান (১০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
তিনি জানান, আয়মানের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এ ঘটনায় সরকারি হিসাব মতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩২ জনে দাঁড়াল।
এর আগে, সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মৃত্যু হয় আরও দুই শিক্ষার্থীর। এদিন দুপুর ২টার দিকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মহতাব (১৪) এবং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মোছা. মাহিয়ার (১৫) মৃত্যু হয়। তারা দুজনেই বার্ন ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে গভীর শোক প্রকাশ করেছে মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২১ জুলাই আনুমানিক বেলা ১টা ১২ মিনিট থেকে ১টা ১৪ মিনিটের মধ্যে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়ির স্থায়ী ক্যাম্পাসের একটি দোতলা ভবনে প্রশিক্ষণকালীন বিধ্বস্ত হয়। ওই দিন দুপুর ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরলেও অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী তখনো অভিভাবকদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় স্কুল শাখার ১৮ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক ও ২ জন অভিভাবক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ। গুরুতর আহত হয়েছেন ৫১ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন ৪০ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, ১ জন অভিভাবক, ১ জন আয়া এবং ১ জন পিয়ন। এ ছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন। তাদের মধ্যে ৩ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন অভিভাবক।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ঘটনায় গত ২২ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধু এ প্রতিষ্ঠানে নিহত, আহত ও নিখোঁজের তথ্য তুলে ধরছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য হালনাগাদকরণের কাজ চলমান। এই দুঃখজনক ঘটনায় হতাহতের সর্বমোট সংখ্যা তুলে ধরছে আইএসপিআর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের শিক্ষার্থী হারানোর এই কঠিন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাবৃন্দ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ গোটা জাতি পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিমান বাহিনী আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে এবং বিমান বাহিনী চিকিৎসা সমন্বয়ের জন্য একটি জরুরি সেল গঠন করেছে।
ঘটনার শুরু থেকে উদ্ধার, সেবা ও চিকিৎসা কাজে অংশ নেওয়া সকল ব্যক্তি এবং সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম বলেন, ‘এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাতেও আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
- ডিআর/এটিআর/এসআইবি