Logo

জাতীয়

দুই দলের সমাবেশে যাওয়া কি অপরাধ? প্রশ্ন পতাকাধারী সেই তরুণের

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০১:২৭

দুই দলের সমাবেশে যাওয়া কি অপরাধ? প্রশ্ন পতাকাধারী সেই তরুণের

বিএনপি ও এনসিপির পতাকা হাতে মিসবাহ জামিল। ছবি : ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

একই দিনে বিএনপি ও এনসিপির সমাবেশ থেকে দল দুটির পতাকা হাতে আলাদা আলাদা ছবি তুলে ভাইরাল হওয়া তরুণ কবি মিসবাহ জামিল প্রশ্ন রেখেছেন, ‘দুইটা দলের সমাবেশে যাওয়া কি অপরাধ? কেন অপরাধ?’ 

সোমবার (৪ আগস্ট) দিনগত মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা কি আমাকে প্রশ্ন না করে তাদের প্রশ্ন করতে পারলেন না, যারা আমারে নিয়ে অপপ্রচার করল? আর আমি স্যাটায়ার করলাম, সেটাও কি অপরাধ? কোন যুক্তিতে অপরাধ?’

যুক্তির বাইরের কথা শুনতে নারাজ উল্লেখ করে পোস্টে তিনি জানান, শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকেই তাকে বলেছেন, বিপদে পড়লে রক্ষা করবে কে! জবাবে তরুণ এই কবি লিখেছেন, ‘আমার রক্ষার দরকার নাই। সবাই যখন রক্ষিত থাকতে চায়, আমি তখন না হয় অরক্ষিতই থাকলাম।’

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে মিসবাহ লিখেছেন, ‘আপনারা কি আমাকে প্রশ্ন না করে তাদের প্রশ্ন করতে পারলেন না, যারা আমারে নিয়ে অপপ্রচার করল? আর দুইটা দলের সমাবেশে যাওয়া কি অপরাধ? কেন অপরাধ? আর আমি স্যাটায়ার করলাম, সেটাও কি অপরাধ? কোন যুক্তিতে অপরাধ?’

এর আগে আরেক পোস্টে বিএনপি ও এনসিপি্র দলীয় পতাকা হাতে ছবি তোলার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন মিসবাহ জামিল। স্যাটায়ার করতেই তিনি ওই দুটি ছবি তুলেছেন উল্লেখ করে লেখেন, ‘‘আমার দুটি ছবি শেয়ার করে বলছে, ‘সকালে ৫০০, বিকালে ৫০০ (টাকা)’। আমাকে বিভিন্ন দলের ভাড়াটে কর্মী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এমনকি আমাকে স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, শিবির বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে। আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

তিনি লেখেন, ‘বিষয়টি আমি পরিষ্কার করছি, আজ বিকেলে এক কলিগের সঙ্গে অফিস থেকে বের হই, কাঁটাবন কনকর্ডের বইয়ের দোকান উজানে আড্ডা দেওয়ার জন্য। যাওয়ার পথে শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশ পাই। সেখানে ছবি তুলে স্যাটায়ার পোস্ট করি। তারপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে এনসিপির সমাবেশে গিয়ে আরেকটি ছবি তুলে একই স্টাইলে পোস্ট করি। পরে সেখান থেকে চলে যাই নীলক্ষেত। কিছুক্ষণ ফুটপাতে বই দেখি। তারপর যাই কাটাবেন, কনকর্ডের বইয়ের দোকানে। সেখানে বই দেখা ও আড্ডায় অনেক সময় কেটে যায়। তখন আর ফেসবুকে ঢোকা হয়নি। সেখান থেকে বের হয়েই দেখি, অনেকে আমার নম্বরে ফোন দিচ্ছেন। বলছেন, তুমি তো ভাইরাল।’

‘‘আমার পোস্ট দুটি যে সার্কাস বা স্যাটায়ার ছিল, তা সুস্থ বোধসম্পন্ন ও জ্ঞানী ব্যক্তিমাত্রই বোঝার কথা। কোনো বিকৃত মস্তিষ্কের লোক ছাড়া এটাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ফেলা সম্ভব নয়। যেমন ধরুন— ‘কে বলে রে মুজিব নাই / মুজিব সারা বাংলায়’ কিংবা ‘কে বলে রে জিয়া নাই / জিয়া সারা বাংলায়’ স্লোগানের কথা। এমন স্লোগান কেন দেওয়া হয়? এটা বোঝাতে যে, জিয়া বা মুজিব মরেও মরেননি। তারা আছেন বা তাদের আদর্শ জিন্দা আছে। তার অর্থ হলো, এই স্লোগান মূলত মৃত নেতাদের নামে দেওয়া হয়। জীবিত নেতাদের নামে এ স্লোগান দেওয়া যুক্তিগত নয়।’’

প্রসঙ্গত, গত রোববার (৩ আগস্ট) ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশ থেকে বিএনপির দলীয় পতাকা হাতে ছবি তোলেন মিসবাহ জামিল। সেটি ফেসবুকে পোস্ট করেন এবং ক্যাপশনে লেখেন-

‘কে বলে রে তারেক নাই 
তারেক সারা বাংলায় 
তারেক রহমান স্মরণে 
ভয় করি না মরণে।’

জাতীয় শহীদ মিনারে এনসিপি আয়োজিত সমাবেশ থেকে আরেকটি ছবি তোলেন তিনি। ছবিতে তাকে দলটির পতাকা হাতে দেখা যায়। ক্যাপশনে লেখা ছিল- 

‘ইমাম নাহিদ স্মরণে 
ভয় করি না মরণে 
কে বলে রে নাহিদ নাই 
নাহিদ সারা বাংলায়।’

অল্প সময়ে ছবি দুটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ছবি দুটি পাশাপাশি পোস্ট করে নেটিজেনরা নানা আলোচনা-সমালোচনা করেন। অনেকেই তখন সন্দেহ করেন, এটি হয়ত সমাবেশে টাকার বিনিময়ে যোগ দেওয়া কোনো তরুণের ছবি। 

মিসবাহ জামিল মূলত কবি। তার প্রকাশিত কবিতার বইয়ের নাম- মানুষ খাওয়ার পদ্ধতি, রাশেদা মোকাম, ঢেউ বলে শাহ আবদুল করিম। ১৯৯৯ সালে সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা তরুণ এই কবি পেশায় সাংবাদিক। 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর