বাংলাদেশে হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১১

বাংলাদেশে হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনে মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বব্যাপী দ্রুত সম্প্রসারিত হালাল পণ্যের বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার হালাল শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন তিনি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
মালয়েশিয়ার পক্ষের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের হালাল বিষয়ক সমন্বয়কারী দাতিন পাদুকা হাজাহ হাকিমাহ বিনতি মোহদ ইউসুফ। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (জাকিম)–এর মহাপরিচালক সিরাজউদ্দিন বিন সুহাইমি এবং হালাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (এইচডিসি)–এর প্রধান নির্বাহী হাইরোল আরিফিন সাহারি।
অধিকর্তারা বৈঠকে জানান, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজারের আকার ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মালয়েশিয়া অন্তত ১৪টি হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক পরিচালনা করছে এবং বাজারে উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডও এই খাতে বড় ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ, যেখানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী বাস করে, এই বাজারে প্রবেশের জন্য উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এজন্য অবকাঠামো উন্নয়ন ও সার্টিফিকেশন ব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ প্রয়োজন। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশই একমাত্র অনুমোদিত হালাল পণ্য সার্টিফিকেশন সংস্থা, যাদের মাধ্যমে মাত্র ১২৪টি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত সার্টিফিকেশন পেয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বৈঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশে হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদা চিহ্নিত করতে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা দরকার। অনেক প্রতিষ্ঠান হালাল সার্টিফায়েড পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহী।’
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস বৈঠকটিকে মূল্যবান অভিজ্ঞতা আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের তথ্যের জন্য ধন্যবাদ— এ যেন হালাল পণ্যের ওপর একটি ক্লাস।’
এর আগে দিনেই হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া একটি নোট অব কোঅপারেশন বিনিময় করেছে, যা কর্মকর্তারা ‘হালাল কূটনীতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বৈঠকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিগগিরই একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে দেশের চাহিদা ও সম্ভাবনা যাচাই করবে।
এ সময় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।
এমএইচএস