Logo

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু হত্যার ৫০ বছর আজ

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৯

বঙ্গবন্ধু হত্যার ৫০ বছর আজ

আজ ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে নিজ বাসভবনে সপরিবারে নির্মম হত্যার শিকার হন তিনি। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্য এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায়।

সেদিন বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি শহীদ হন তাঁর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন পুত্র মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর মেয়ে বেবি, পুত্র আরিফ, নাতি সুকান্ত বাবু, ভাগনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, আত্মীয় আবদুল নঈম খান রিন্টু, কর্নেল জামিলসহ অন্তত ২০ জন। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। পাকিস্তান আমলে তিনি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনীতিকে সুসংগঠিত করেন। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে তিনি বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে রাজনৈতিক আন্দোলনের কেন্দ্রে আনেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ মুক্তিকামী বাঙালির স্বাধীনতার প্রেরণা হয়ে ওঠে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তিনি হন দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী।

পঁচাত্তরের ওই হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বিচারের পথ রুদ্ধ করেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি বাতিল করে মামলা চালু করে। ১৯৯৮ সালে আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালত ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। ২০১০ সালে পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়; একজনকে বিদেশ থেকে ফেরত আনার পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। একজন বিদেশে মারা গেছেন। পাঁচজন এখনো পলাতক। 

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর সরকারি ছুটি ও জাতীয় শোক দিবস বাতিল করা হয়। এর পরে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে সরকারি বা দলীয়ভাবে এবার বড় কোনো আয়োজন থাকছে না।

গত বছরের ৫ আগস্টধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। এর ছয় মাস পর দ্বিতীয়বার হামলা চালিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়।

তবে দিনটি সামনে রেখে বাংলাদেশ জাসদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল নিজেদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশ জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের সমালোচনা যেমন যৌক্তিক, তেমনি সেই কারণ দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডকে ন্যায্যতা দেওয়াও গ্রহণযোগ্য নয়।

সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, তাঁর স্মৃতিকে নিষিদ্ধ করে মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যাবে না।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দিনটি ঘিরে রাজধানী ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর