নতুন দল নিবন্ধন : ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ইসির নির্দেশ

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪৫

ছবি : সংগৃহীত
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ২২টি দল বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের দপ্তরের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতা সরেজমিন যাচাই করে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের মাঠ পর্যায়ে পাঠানো এ সংক্রান্ত নির্দেশনা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ২২টি দলকে মাঠ পর্যায়ের তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ওই ২২টি দলের জেলা ও উপজেলার দপ্তরের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতা সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এতে আরও বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। তারা নির্ধারিত চেকলিস্ট পূরণ করে সকল কাগজপত্রে পৃষ্ঠা-নম্বর দিয়ে সিলগালা করে বিশেষ খামে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন। এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা রাজনৈতিক দলভিত্তিকভাবে খাম একত্রিত করে গোপনীয়ভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবেন। একইভাবে উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদন করবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। তারাও চেকলিস্ট পূরণ করে কাগজপত্র সিলগালা করে জেলা পর্যায়ে পাঠাবেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপজেলা থেকে পাওয়া খামগুলো রাজনৈতিক দলভিত্তিকভাবে একত্রিত করে বিশেষ খামে সিলগালা করে কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাঠ পর্যায়ের এই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবে।
ইসি সূত্র জানায়, তথ্য ঘাটতি পূরণে ১৪৩টি দলকেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এনসিপিসহ ৮৪টি দল ঘাটতি পূরণ করে ইসিতে কাগজপত্র জমা ও চিঠি দেয়। ৫২টি দল ঘাটতি পূরণে সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে ৬২টি দল ঘাটতি তথ্য জমা দিলেও তা শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ৬টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও বিধি অনুযায়ী তার সুযোগ নাই। একটি দল নির্ধারিত সময়ের পরে জমা দেয়। সব মিলিয়ে ১২১টি দলের নিবন্ধন আবেদন না-মঞ্জুর করা হবে। আর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ২২ টি দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করছে ইসি।
যে ২২ দলের আবেদন মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করছে ইসি
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দলগুলো হলো-
১. ফরোয়ার্ড পার্টি : এই দলের মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন মো. মাহবুবুল আলম চৌধু।
২. আমজনতার দল : কর্নেল মিয়া মসিউজ্জামান এই দলের সভাপ।
৩. বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি) : চেয়ারম্যান এমএম শাহাদাত।
৪. বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) : জনাব মো. নুরুল হক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
৫. বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : মহাসচিব মুহাম্মদ মুসা বিন ইযহার।
৬. বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) : এই দলের সমন্বয়ক মাসুদ রা।
৭. মৌলিক বাংলা : সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ সা।
৮. বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টি : চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন।
৯. জাতীয় জনতা পার্টি : অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর আকন এই দলের চেয়ারম্যান।
১০. জনতার দল : ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. মো. শামীম কামাল চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
১১. জনতা পার্টি বাংলাদেশ : ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান।
১২. বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি : আহ্বায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আম।
১৩. জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) : মো. নাহিদ ইসলাম এই দলের আহ্বায়ক।
১৪. বাংলাদেশ জাতীয় লীগ : চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম।
১৫. ভাসানী জনশক্তি পাটি : শেখ মো. রফিকুল ইসলাম এই দলের চেয়ারম্যান।
১৬. বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ : সভাপতি মো. আতিকুর রহমান (রাজা)।
১৭. বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম) : সভাপতি আব্দুস সামাদ সুজন।
১৮. জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ) : এই দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জল।
১৯. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি : মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম।
২০. বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস) : সভাপতি মো. হাস।
২১. বাংলাদেশ সলুশন পার্টি : শামছুল হক এই দলের সভাপতি।
২২. নতুন বাংলাদেশ পার্টি : চেয়ারম্যান মেজর সিকদার আনিসুর রহমান (অব.)।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয় জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়ম কানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে এসব নিয়ম কানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।
এসআইবি/এএ