ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশ দেন। বৈঠকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে হবে। পতিত ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি যখন দেখছে দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দ্রুততর হচ্ছে, তারা তত বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এটি শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু। তারা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যহত করার জন্য সকল শক্তি নিয়ে মাঠে নামছে।’

তিনি আরও জানান, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার মনে করছে, দেশের স্বার্থে জনগণের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকা অপরিহার্য।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আসন্ন দুর্গাপূজায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে নানা ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা হতে পারে। গত বছর দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। তাই এ বছরও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগেভাগেই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে দেশের সকল ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা শীঘ্রই এসব সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়া, জুলাই হত্যাকাণ্ডের পর গড়ে ওঠা রাজনৈতিক ঐক্য পুনরায় দৃঢ় রাখা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পর্ক সুসংহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচনের সময় কোথাও নিরাপত্তাজনিত কোনো অঘটন যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঝটিকা মিছিল ও বেআইনী সভা-সমাবেশ মনিটরিং জোরদার এবং যারা এর পেছনে সক্রিয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

ডিআর/এমএইচএস