নির্বাচনকালীন প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় ইসি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৩

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাইছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো থেকে একজন করে উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা (ফোকাল পয়েন্ট) নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন। এরা ইসি, মন্ত্রণালয় ও মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করবেন। চলতি সপ্তাহেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, কৃষি, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন।
এরই মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনি প্রশাসন সাজাতে মাঠপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন শুরু করেছে। কমিশনের ভাষ্য, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে, যাতে অপসৃত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে নাশকতার মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে।
ইসি-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা দায়িত্বে গাফিলতি করলে সরকারের অনুমতি ছাড়াই তাকে প্রত্যাহারের ক্ষমতা চাইবে কমিশন। তবে বিকল্প কর্মকর্তা প্রস্তুত রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে। এজন্য বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের একটি ‘ফিডলিস্ট প্যানেল’ তৈরি করা হবে। একইভাবে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার) জন্য আলাদা প্যানেল রাখা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩০০ আসনকে ১৫ অঞ্চলে ভাগ করে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। এই দল আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সঙ্গে কাজ করবে। একই সঙ্গে দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তারা অবহেলা করছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবে।
কমিশন মনে করছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এজন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তাদের পাশে একজন কনস্টেবল বা আনসার সদস্য রাখা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রের বাইরে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা চলছে। এসব শিক্ষার্থী ভোটারদের সহায়তা করবেন এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবেন।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার ও মাঠ প্রশাসন সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা সুপারিশমালা তৈরি করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সরকারের প্রশাসনের ওপর আমাদের আস্থা আছে। তবে তফসিল ঘোষণার পর কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি ধরা পড়লে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হবে। প্রয়োজনে পুরো প্রশাসনই বদলে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠানো হচ্ছে যাতে নির্বাচনকালীন সময়ে একজন ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। এর মাধ্যমে সমস্যা দ্রুত শনাক্ত ও সমাধান সম্ভব হবে বলে আশা করছে কমিশন।
এসআইবি/এমএইচএস