এভিয়েশন খাতে বড় পরিবর্তন : তৃতীয় টার্মিনাল, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কার্গো সেবায় অগ্রগতি

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:১১
-68cbbebda945d.png)
বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ যাত্রীসেবা ও আন্তর্জাতিক সংযোগে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে সেবার মান আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত হয়েছে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। লাগেজ হ্যান্ডলিং, যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা তল্লাশি ও তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে এখন আগের চেয়ে বেশি শৃঙ্খলা ও গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সবচেয়ে আলোচিত প্রকল্প ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। ইতোমধ্যে টার্মিনালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং যেকোনো সময় যাত্রীসেবার জন্য এটি চালু হতে পারে। নতুন টার্মিনালে রয়েছে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি এরাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক ও ৩টি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক। এছাড়া বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি চালু হলে বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী ধারণক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি হবে এবং নতুন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ পাবে।
অন্যদিকে, কক্সবাজার বিমানবন্দর আগামী অক্টোবর থেকে আন্তর্জাতিক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এখানে ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ রানওয়ে নির্মিত হয়েছে, যা দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম। এর ফলে বৃহদায়তন উড়োজাহাজ যেমন বোয়িং-৭৭৭ ও ড্রিমলাইনার অবতরণ করতে পারবে। এটি হবে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। পর্যটন ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে বিদেশি পর্যটক সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি আসবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্লাইট চালু হয়েছে। ব্যবসায়ী মহল বলছে, এর ফলে পচনশীল কৃষিপণ্য, মাছ ও ফুল দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ কমছে এবং পণ্যের মান অক্ষুণ্ণ থাকছে, যা রপ্তানি খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করছে।
একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরেও উন্নয়ন কাজ চলছে। রানওয়ে সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা বৃদ্ধির উদ্যোগ, নিরাপত্তা জোরদার এবং আধুনিক ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা সংযোজনের ফলে সামগ্রিক বিমান চলাচল ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে, বেবিচকের উদ্যোগে বিমান চলাচল খাত যাত্রীসেবা, পর্যটন ও রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ এভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
কবির/এইচকে