অর্ধেকের বেশি নারী জীবদ্দশায় স্বামীর সহিংসতার শিকার : জরিপ
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:২৯
দেশে অর্ধেকের বেশি নারী (৫৪ শতাংশ) জীবদ্দশায় স্বামী বা জীবনসঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’ অনুযায়ী, সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনক। সোমবার (১৩ অক্টোবর) জরিপটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়।
জরিপে দেখা গেছে, দেশের প্রতি চার নারীর মধ্যে তিনজনই (৭৬%) অন্তত একবার স্বামী বা জীবনসঙ্গীর দ্বারা সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন। এতে শারীরিক, যৌন, মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতা, পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া গত এক বছরে প্রায় অর্ধেক নারী (৪৯%) সহিংসতার শিকার হয়েছেন। উদ্বেগজনকভাবে, আক্রান্ত নারীদের ৬২ শতাংশ কখনোই এ সহিংসতার তথ্য প্রকাশ করেননি।
নন-পার্টনার কর্তৃক সহিংসতার ক্ষেত্রে শারীরিক হামলার জন্য সবচেয়ে বেশি জড়িত শাশুড়ি ও পুরুষ আত্মীয়রা। অন্যদিকে, যৌন সহিংসতার অধিকাংশ ঘটনা ঘটে পরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে, যেমন পুরুষ আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিতজন।
প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংঘটিত জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার (Technology-Facilitated Gender-Based Violence) ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ৮.৩ শতাংশ নারী যৌন ব্ল্যাকমেইল, ছবি নিয়ে অপব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন।
পরিষেবা গ্রহণের হার খুবই কম। সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ১৪.৫ শতাংশ চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। স্বামী দ্বারা সহিংসতার ক্ষেত্রে ৭.৪ শতাংশ নারী আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, যেখানে স্থানীয় নেতার কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রবণতা বেশি। নন-পার্টনার দ্বারা সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ৩.৮ শতাংশ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং পুলিশের কাছে সবচেয়ে বেশি সাহায্য চেয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, সহিংসতার ঝুঁকি বাড়ায় স্বল্পবয়স, যৌতুক প্রথা, স্বামীর মাদকাসক্তি বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং শহুরে বস্তিতে বসবাস। অন্যদিকে, স্বামীর উচ্চতর শিক্ষা সহিংসতার ঝুঁকি কমায়। নন-পার্টনার সহিংসতার ক্ষেত্রে নারীর কম বয়স, সীমিত শিক্ষা ও প্রতিবন্ধিতা ঝুঁকির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এছাড়া দুই নারীর মধ্যে ১ জনেরও কম (৪৮.৫%) জানেন কোথায় সহিংসতার অভিযোগ জানাতে হয় এবং মাত্র ১২.৩ শতাংশ নারী সহায়ক হেল্পলাইন ১০৯ সম্পর্কে অবগত।
এসআইবি/এমবি

