দেশে গত সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৫৬৭টি দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও ৯৮২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে ৫০৪টি। যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০২ জন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই প্রেস বার্তায় জানানো হয়, সেপ্টেম্বর মাসে দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার খবর বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে ১৯১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৯ জন নিহত ও ১৮৮ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং নিহতের ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

দুর্ঘটনার প্রায় ২৯ দশমিক ০১ শতাংশই মোটরসাইকেল সংশ্লিষ্ট। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

সংগঠনটি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নিবন্ধন প্রদানের পরিকল্পনায় গলদ রয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। যেখানে ১২৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ১২২ জন, আহত ২১৬ জন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে। যেখানে ২২টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৭ জন, আহত ৪৭ জন।

দুর্ঘটনার ধরনে দেখা যায়, ৪৮ দশমিক ৮০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে গাড়ি চাপায়, ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে এবং ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি খাদে পড়ে। মোট দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ০৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে এবং ২৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।

রেলপথে সেপ্টেম্বর মাসে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত, ১৫ জন আহত এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে ১২৬ জন চালক, ১০২ জন পথচারী, ৬৭ জন নারী ও ৪৯ জন শিশু। এছাড়া ৫৬ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন শিক্ষক, ১ জন আইনজীবী, ১ জন চিকিৎসক, ৫ জন পুলিশ সদস্য ও ৭ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছিলেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বর্ষায় সড়কে গর্ত সৃষ্টি, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল, রোড সাইন ও সড়কবাতির অভাব, অদক্ষ চালক এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহন— এসবই দুর্ঘটনার বড় কারণ।

সংগঠনটি দুর্ঘটনা রোধে অবিলম্বে বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক মেরামত, রাতের বেলায় পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে।

ডিআর/এমবি