বাল্যবিবাহ রোধে জাতীয় পরিকল্পনা প্রয়োজন : উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৫
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাল্যবিবাহ রোধ না করতে পারলে গ্রামীণ নারী কখনও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবেন না। এজন্য একটি জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস–২০২৫ উপলক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত “জলবায়ু অভিযোজনে গ্রামীণ নারী” শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীদের সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে দিতে হবে। তারা হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করে একদিকে যেমন পরিবারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনছেন, তেমনি ডিম, দুধ ও মাংসের সরবরাহের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি নিশ্চিত করছেন। তাই পুষ্টি ও অর্থনীতিতে গ্রামীণ নারীর অবদান অপরিসীম।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীরা ঠিকই আছেন, কিন্তু তাদের সামনে আনা হয় না। এমন নয় যে তারা নেই— বরং তাদের অবদান দৃশ্যমান করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যদি সামান্য উৎসাহ ও সহায়তা দিতে পারি, তাদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হবে।’
জেলেদের ন্যায্য মজুরি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, দাদন প্রথার কারণে জেলেরা সঠিক মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই প্রথা দূর করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলে পরিবারের নারীদের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. হযরত আলী, সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের উপদলনেতা ক্যাথারিনা কয়েনিগ, সুইডেন দূতাবাসের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার কর্মসূচির কর্মকর্তা রেহানা খান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের “সহনশীল জীবিকা কর্মসূচি”-এর ব্যবস্থাপক মেহের নিগার ভূঁইয়া।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম স্বাগত বক্তব্য দেন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্মকর্তা তাজওয়ার মাহমিদ।
বক্তারা বলেন, কৃষি উৎপাদন ও জলবায়ু সহনশীলতায় নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা সমাজে এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রায়ই অদৃশ্য থেকে যায়। তারা নারী-সংবেদনশীল কৃষি ও জলবায়ু নীতি প্রণয়ন, ভূমি, অর্থ ও প্রযুক্তিতে সমান প্রবেশাধিকার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
সেমিনারে নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী এবং দেশের বিভিন্ন এলাকার নারী কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।

