Logo

জাতীয়

সেন্টমার্টিন খুলছে শনিবার, নভেম্বরে জাহাজ চালাবেন না মালিকরা

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৯

সেন্টমার্টিন খুলছে শনিবার, নভেম্বরে জাহাজ চালাবেন না মালিকরা

দীর্ঘ নয় মাস পর শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে আবারও সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকেরা। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের মানতে হবে ১২টি নির্দেশনা।

নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস এ দ্বীপে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এবারও নভেম্বরে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না পর্যটকরা। ফলে যাত্রী সংকটে জাহাজ মালিকরাও নভেম্বরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কিন্তু নভেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলায় ঘুরে ফিরে আসার শর্ত থাকায় অনেক পর্যটকই ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে সরে যাচ্ছেন। পর্যটকরা বলেন, দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়মে এমন দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ভ্রমণ করা সময়সাপেক্ষ ও ক্লান্তিকর।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, ১ নভেম্বর থেকে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পর্যটক বা যাত্রী না থাকায় জাহাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। গত বছরের মতো ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর দুই মাসে ১ লাখের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দিনে গিয়ে দিনে আসার যে সিদ্ধান্ত, সেটা আসলে একটা তামাশা করছে। পর্যটক ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে।’

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে রয়েছে ১ হাজার ৭৬ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য। অনিয়ন্ত্রিত অবকাঠামো নির্মাণ, অতিরিক্ত পর্যটক সমাগম ও পরিবেশদূষণের কারণে সেন্টমার্টিনের প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘দ্বীপের অর্থনীতি এখন প্রায় পঙ্গু। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রলার, দোকান সবখানেই নেমে এসেছে অচলাবস্থা। স্থানীয় মানুষের জীবিকা পুরোপুরি পর্যটননির্ভর। এখন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার পক্ষে, তবে জীবিকার দিকটাও যেন সরকার বিবেচনায় নেয় এটাই আমাদের মিনতি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন। আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করবে।

মানতে হবে যে ১২ নির্দেশনা :
সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১২টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া যাবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে।

দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বরে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।

সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সেন্টমার্টিন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর