Logo

জাতীয়

খুলল সেন্টমার্টিন, প্রথম দিনে ছাড়েনি জাহাজ

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২৯

খুলল সেন্টমার্টিন, প্রথম দিনে ছাড়েনি জাহাজ

দীর্ঘ নয় মাস বন্ধ থাকার পর শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য ১২টি নির্দেশনায় আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে উদ্বোধনের দিনেও কোনো পর্যটক যাচ্ছেন না দ্বীপে। কারণ কোনো জাহাজ মালিক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নেওয়ায় পর্যটকশূন্যই থাকছে সেন্টমার্টিন।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গত বছরের মতো এবারও নভেম্বরে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না পর্যটকরা। এর ফলে যাত্রী সংকটে জাহাজ মালিকরা নভেম্বরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ও ‘বার-আউলিয়া’ নামের দুটি জাহাজ চালানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে জাহাজ মালিকরা পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ফলে শনিবার কোনো জাহাজই সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়ছে না।

তিনি বলেন, যদি সকাল ৭টায় কক্সবাজার থেকে জাহাজ ছাড়ে, তবে দ্বীপে পৌঁছাতে লাগে প্রায় দুপুর ২টা। আবার একইদিনে ফিরে আসা বাস্তবসম্মত নয়। এর সঙ্গে ট্যুরিজম বোর্ডের সফটওয়্যারও এখনো চালু হয়নি। ফলে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়মে পর্যটক পাওয়া যাচ্ছে না।

সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির আহ্বায়ক আবদুর রহমান বলেন, দ্বীপে ছোট-বড় আড়াই শতাধিক হোটেল-রেস্টহাউজ রয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো বুকিং বা প্রস্তুতি নেই। তিনি বলেন, গত বছর দেখেছি, কক্সবাজার থেকে ৮ ঘণ্টা যাত্রা করে কেউ দ্বীপে এসে রাত না থেকে ফিরে যায় না। তাই এবারও আমরা এখনো প্রস্তুতি নিইনি। ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে কিছুটা পরিবেশ তৈরি হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শুরু করব।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিন যাতায়াতে অনুমতি নেয়নি। দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের ১২ নির্দেশনা এবারও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও জানান, পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করতে টেকনাফের পরিবর্তে কক্সবাজার শহর থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মানতে হবে যে ১২ নির্দেশনা :
সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১২টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া যাবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে।

দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বরে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।

সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সেন্টমার্টিন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর