ইন্টারনেটে বিদ্বেষ ছড়ালে ৫ বছর কারাদণ্ড, ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩০
প্রতীকী ছবি
ইন্টারনেটে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৯৯ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় এসব বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বুধবার (৫ নভেম্বর) এ অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করেছে। অংশীজন এবং সাধারণ নাগরিকরা ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত এ বিষয়ে তাদের মতামত জমা দিতে পারবেন।
অধ্যাদেশের ৬৬ক ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী যদি টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দেশের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ণ করে, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে, সহিংসতা সৃষ্টি করে বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা দেয়, অথবা সরকারি বা ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক, সার্ভার বা স্যাটেলাইট সিস্টেমে ক্ষতি সাধন করে— তাহলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ৯৯ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড আরোপ করা হবে।
ধারা ৬৯-এ বলা হয়েছে, কেউ যদি টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্র ব্যবহার করে অশ্লীল, অপমানজনক বা হুমকিমূলক বার্তা, ছবি বা ভিডিও প্রেরণ করে, তাহলে প্রেরণকারী বা প্রস্তাবক— অর্থাৎ উভয়ই— অনধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা ১.৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে এমন বার্তা পাঠানো হলেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
ধারা ৭০ অনুযায়ী, কেউ যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া অন্যকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করলে তাকে অনধিক এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
অধ্যাদেশে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা যেমন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন মেসেজিং ও ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপের জন্য সরকার অনুমোদনের বিধানও রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে নিবন্ধন করতে হবে এবং প্রয়োজনে নিরাপত্তা সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
এ ছাড়া, অনুমতিহীনভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা বা বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার প্রয়োজনে সরকার যেকোনো প্ল্যাটফর্ম স্থগিত বা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখবে।
অধ্যাদেশের খসড়া সম্পর্কে মতামত ই-মেইল (secretary@ptd.gov.bd) বা ডাকযোগে সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা ঠিকানায় ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঠানো যাবে।
এমএইচএস

