Logo

জাতীয়

‘ভোটের সাথী’ অ্যাপে প্রার্থীকে সরাসরি প্রশ্ন করবেন ভোটাররা

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭

‘ভোটের সাথী’ অ্যাপে প্রার্থীকে সরাসরি প্রশ্ন করবেন ভোটাররা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোটাররা সরাসরি তাদের এলাকার প্রার্থীদের প্রশ্ন করতে পারবেন। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এ সুযোগটি তৈরি করতে যাচ্ছে নতুন একটি নির্বাচনী অ্যাপ ‘ভোটের সাথী’-এর মাধ্যমে। অ্যাপটির মাধ্যমে প্রার্থী ও ভোটারের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা জবাবদিহিতা বাড়াবে এবং নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আইসিটি বিভাগ জানিয়েছে, অ্যাপটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে ভোটাররা প্রার্থীদের হলফনামা, আয়কর ও শিক্ষাগত তথ্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নির্বাচনী ইশতেহার দেখতে পারবেন। পাশাপাশি তারা সরাসরি প্রার্থীকে প্রশ্ন করতে ও নিজেদের ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন। প্রার্থীরাও ভোটারদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। ভোট চলাকালে অনিয়মের তথ্য রিপোর্ট করার ব্যবস্থাও থাকবে, যা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো যাচাই করতে পারবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অ্যাপটি নির্বাচনে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। জানা গেছে, এর জন্য সরকারের কোনো অতিরিক্ত ব্যয় হবে না। অ্যাপটির কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আইসিটি বিভাগ ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে। প্রার্থীদের সম্পদ বিবরণী, হলফনামা, আসনভিত্তিক তালিকা এবং ভোটার তথ্য নিরাপদভাবে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

অ্যাপটির উন্নয়ন কার্যক্রম তদারকি করছেন বিজিডি ই-গভ সার্ট প্রকল্পের পরিচালক হোসেন বিন আমিন। তিনি জানিয়েছেন, এটি একটি উদ্ভাবনী প্রকল্প, যা ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও প্রার্থীদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার মতে, এটি ভোটারদের সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। আগে ভোটাররা প্রার্থীদের বিষয়ে যথাযথ ধারণা না পেয়ে ভোট দিতেন, কিন্তু এখন সরাসরি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে প্রার্থীর মনোভাব ও নীতিগত অবস্থান বোঝা সম্ভব হবে।

অ্যাপটিতে মোট ছয়টি মূল ফিচার থাকবে-

১. প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য ও ইশতেহার প্রদর্শন;

২. ভোটারদের সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ;

৩. ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য;

৪. প্রার্থীর জবাবদানের ব্যবস্থা;

৫. অনিয়ম রিপোর্ট করার সুবিধা;

৬. ফ্যাক্ট-চেকিং ও মনিটরিং সিস্টেম।

অ্যাপটির নিরাপত্তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে নির্বাচন কমিশনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইসি সচিবালয়ের ডাটাবেজ অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ অ্যাক্সেস দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভিপিএনের মাধ্যমে সীমিত অ্যাক্সেস দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আবদুল আলীম মনে করেন, ডিজিটাল যুগে এ অ্যাপটি প্রার্থী-ভোটার যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এতে মাঠপর্যায়ের সংঘাত কমবে এবং ভোটাররা ঘরে বসেই প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে পারবেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অ্যাপটি সচল থাকলে নাগরিক সেবায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।

এসআইবি/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সংসদ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর