ছবি : সংগৃহীত
রাষ্ট্র সংস্কারের পথনকশা নির্ধারণে দীর্ঘ আলোচনার পর আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন, ২০২৫’ নামে আদেশ জারি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বেলা ১১টায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে আদেশ জারি করা হবে। একই আদেশের ভিত্তিতে একদিনেই অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান দূর করতে ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে, বিশেষ করে বড় দুই দল বিএনপি ও জামায়াতের উদ্বেগ বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। বুধবারও বিএনপি ও জামায়াত নেতারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরেননি। জামায়াতসহ আটটি ইসলামি দল সরকারের প্রতি আলটিমেটাম দিয়ে জানিয়েছে, রোববারের মধ্যে আদেশ জারি না হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবে।
সরকারের সূত্রে জানা গেছে, সংকট সমাধানের জন্য বিবেচনায় রাখা হয়েছে কয়েকটি বিকল্প। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো— জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজন করা, সংসদের উচ্চকক্ষ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে গঠিত হবে, গণভোটে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকবে না, এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতার সুপারিশ বাতিল করা হতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২৮ অক্টোবর সরকারকে সুপারিশপত্র দেয়। এতে বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সরকার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করায় ৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত মতামত জানাতে বলা হলেও কোনো ঐকমত্য হয়নি।
উল্লেখ্য, এটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ষষ্ঠ জাতির উদ্দেশে ভাষণ। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রথম ভাষণ দেন গত বছরের ২৫ আগস্ট, যেখানে নির্বাচনের সময় নির্ধারণকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাষণে রাষ্ট্র সংস্কার, কমিশন গঠন ও নির্বাচনের সময়সূচি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।
আজকের ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কারের নীলনকশা ‘জুলাই সনদ’-এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম।
এমএইচএস

