প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত শক্তিশালী ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় রাজধানীজুড়ে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং স্থায়ীত্ব ছিল প্রায় ২৬ সেকেন্ড।
পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলীতে পাঁচতলা ভবনের রেলিং ধসে তিন পথচারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। নিহতদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পের সময় হঠাৎ রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়।
মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে এএসআই জাকারিয়া হোসেন নয়ন ফায়ার সার্ভিসকে নিশ্চিত করেছেন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩ জন মারা গেছেন। ১০ জন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
এর আগে আরমানিটোলা কসাইটুলিতে আটতলা ভবন ধসে পড়ার সংবাদ পাওয়া গেলেও সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ভবনের কোনো কাঠামোগত তেমন ক্ষতি হয়নি। শুধুমাত্র পলেস্তারার অংশ ও ইট খসে পড়েছে।
নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে পাশের দোতলা বাড়ির ছাদে থাকা এক ব্যক্তি আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
বারিধারা ব্লক–এফ, রোড–৫–এর একটি বাসায় আগুন লাগে। দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুনের কারণ ভূমিকম্প কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুর স্বামীবাগের একটি আটতলা ভবন হেলে পাশের আরেকটি ভবনে আটকে যায়। সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশনের টিম গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।
কলাবাগানের আবেদখালী রোডে একটি সাততলা ভবন হেলে পড়ার তথ্য পাওয়া যায়। মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশন জানায়, ভবনটি নিরাপদ আছে; আতঙ্কিত হয়ে বাসিন্দারা ফোন দিয়েছেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি ভবনে ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেলেও স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশনের পরিদর্শনে কোনো ক্ষয়ক্ষতি মেলেনি।
চাঁদপুর, নীলফামারী, সীতাকুণ্ড, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, পটুয়াখালী, বগুড়া, বরিশাল, মৌলভীবাজারেও তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একটি বাসা-বাড়িতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে সড়কের পাশের একটি পুরোনো দেয়াল ধসে ফাতেমা নামের কয়েকদিন বয়সী এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নবজাতকের মা কুলসুম বেগম (২৫) ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতেও অনুভূত হয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
ভূমিকম্পে মোট কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছে।
এমএইচএস

