Logo

জাতীয়

গ্রিন বিল্ডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা

Icon

নির্মাণ ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:১৪

গ্রিন বিল্ডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সব সরকারি ভবনকে ‘গ্রিন বিল্ডিং’ হিসেবে নির্মাণের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখনই এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রয়োজন এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরকে এক মাসের মধ্যে গ্রিন বিল্ডিংয়ের পূর্ণাঙ্গ ম্যানুয়াল প্রস্তুত করতে হবে। তার মতে, কোনো মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর গ্রিন বিল্ডিংয়ের বাইরে গেলে চলবে না। সম্প্রতি রাজধানীর গণপূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, গ্রিন প্রকিউরমেন্ট এবং গ্রিন বিল্ডিং’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কোনো মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর গ্রিন বিল্ডিংয়ের বাইরে গেলে চলবে না। বাধ্যতামূলক নীতি থাকলে কম পানি ব্যবহার, পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো এবং আধুনিক পরিবেশবান্ধব নির্মাণশৈলী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

গ্রিন বিল্ডিংয়ের ধারণা
গ্রিন বিল্ডিং হলো এমন ভবন, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং বিদ্যমান অবকাঠামোগত চাপ বিবেচনা করলে গ্রিন বিল্ডিং শুধু বিলাসিতা নয়; বরং ভবিষ্যতের জন্য জরুরি একটি প্রয়োজন।

এ বিষয়ে ভাইয়া হাউজিং অ্যান্ড ভাইয়া হোটেলস লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ফয়সাল আহমেদ বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করতে হলে এখনই আমাদের পরিবেশবান্ধব বিল্ডিংয়ের দিকে ঝুঁকতে হবে। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এটি আরও জরুরি। কারণ, বাংলাদেশ শক্তি-সম্পদে খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। আর গ্রিন বিল্ডিং মানে শুধু বিল্ডিংয়ে সবুজায়ন নয়। এই বিল্ডিংগুলো জ্বালানিসাশ্রয়, পানির সঠিক ব্যবহার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক আলো ও বাতাসের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং একটি স্বাস্থ্যকর বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করে।

পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য ও প্রযুক্তি
আধুনিক আবাসনে এখন পরিবেশবান্ধব স্থাপত্যকৌশল অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ভবনের নকশায় প্রাকৃতিক বায়ুপ্রবাহ ও আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার কমে আসে এবং গরমের সময় এয়ার কন্ডিশনার বা শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পায়। জ্বালানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি যেমন এলইডি লাইট, স্মার্ট এনার্জি মিটার, ইনসুলেটেড গøাস ও শক্তি দক্ষ যন্ত্রপাতি এখন গ্রিন বিল্ডিংয়ের অন্যতম উপাদান।

সোলার প্যানেল ও রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং
গ্রিন বিল্ডিংয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা যায়, যা জাতীয় গ্রিডের ওপর চাপ কমায়। পাশাপাশি, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। বাংলাদেশের মতো পানিসম্পদ সংকটাপন্ন দেশে এটি একটি যুগোপযোগী সমাধান। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে। বিশেষ করে করপোরেট হাউস, বাণিজ্যিক ভবন এবং কিছু রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভাইয়া হাউজিং লিমিটেড, কনকর্ড, ক্রিডেন্স হাউজিংসহ বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান গ্রিন বিল্ডিং নীতিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে এই সংখ্যা এখনো সীমিত। ভবিষ্যতে আরও অনেক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে গ্রিন বিল্ডিং এখনো শুরুর পর্যায়ে হলেও এর গুরুত্ব প্রতিদিন বাড়ছে।

বিকেপি/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নির্মাণ কথা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর