একদিনেই নির্বাচন-গণভোট, আজই অনুমোদন পেতে পারে আইন
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট আয়োজনের সম্ভাবনা সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক কাঠামো ও প্রয়োজনীয় সক্ষমতা মূল্যায়নের দায়িত্ব নিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ।
ইসির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভোট-সংশ্লিষ্ট আইনটি অনুমোদন পেতে পারে। আইনটি অনুমোদিত হলে একই দিন অধ্যাদেশ জারিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এর সঙ্গে সঙ্গেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি দ্রুত এগোচ্ছে। ইসি সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘দুই-তিন দিনের মধ্যেই তফসিল ঘোষণার তারিখ পাকা হয়ে যাবে। আগেই বলেছিলাম, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার প্রস্ততি রয়েছে।’ একই দিনে দুই ধরনের ভোটগ্রহণের কারণে বুথসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টিও ইসি বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এবারই প্রথম জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে যাচ্ছে। এতে ভোটারদের দুই ধরনের ব্যালট দেওয়া হবে। ফলে প্রতিটি কেন্দ্রে বুথ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে এবং ভোট শুরুর সময়ও আরও আগে আনার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়; এবার সময় কিছুটা বাড়ানো বা এগিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষিত প্রস্তুতির মতে, সারাদেশে ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৯টি বুথ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ৩ হাজার ভোটারে একটি কেন্দ্র ও ৫০০ পুরুষ বা ৪০০ নারী ভোটারে একটি বুথ—এই হিসাব সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে করা হলেও একই দিনে গণভোট হলে বুথসংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভোটগণনার সুবিধা বিবেচনায় অতিরিক্ত ভোটকর্মী নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন কয়েকজন কমিশনার।
সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং অফিসার, একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং প্রতি বুথে দুই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। গণভোটের দায়িত্বও একই কর্মকর্তা-কর্মচারীই পালন করবেন বলে ইসি জানিয়েছে।
গণভোট আয়োজনের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশনার মাছউদ বলেন, ‘রোববার ও সোমবার আমি গণভোটের ফরম্যাট নিয়ে কাজ করেছি।’ প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধনী ও প্রয়োজনীয় অধ্যাদেশ তিন-চার কর্মদিবসের মধ্যেই প্রস্তুত হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তিনটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৭ ও ১৯৮৫ সালের গণভোটকে তৎকালীন শাসকদের ক্ষমতা বৈধ করার উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়। আর ১৯৯১ সালের গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতেই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার পথ তৈরি হয়েছিল।
এসআইবি/এমবি

