নারীর অধিকার সুরক্ষায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন আইন শক্তিশালীকরণের দাবি
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে শক্তিশালী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে “নারী অধিকার সুরক্ষায় শক্তিশালী নিবন্ধন আইন” শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব মতামত তুলে ধরেন বক্তারা।
তাদের মতে, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিদ্যমান আইনের নানা দুর্বলতা এ লক্ষ্য অর্জনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ওয়েবিনারটির আয়োজন করে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল— ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি’।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, জন্ম নিবন্ধন না থাকায় অনেক মেয়ের বয়স প্রমাণ করা যায় না, ফলে তারা সহজেই বাল্যবিবাহের শিকার হয়। বাল্যবিবাহ নারীর ওপর শারীরিক-মানসিক সহিংসতা বাড়ায় এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক মাতৃত্বের ঝুঁকি ও মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধি করে। বক্তারা বলেন, নিবন্ধনহীনতা নারী পাচার ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় বাধ্য হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করে।
বাংলাদেশে বিশেষ করে সম্পত্তিহীন নারীদের মৃত্যুনিবন্ধন হার অত্যন্ত কম।
বক্তারা বলেন, নারীর জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বাড়াতে আইন সংশোধন করে পরিবারের বদলে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিতে হবে, যাতে হাসপাতালে ঘটে যাওয়া জন্ম ও মৃত্যু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়।
বর্তমানে দেশে জন্ম নিবন্ধনের হার ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৪৭ শতাংশ, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় অনেক কম।
ওয়েবিনারের প্রধান অতিথি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ক্যাম্পের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী বলেন, “জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নারীদের অদৃশ্য করে তোলে। প্রতিটি নারীর পরিচয় ও অধিকার নিশ্চিত করতে নিবন্ধন আইন শক্তিশালী করা জরুরি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, “নারীর ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অধিকার রক্ষায় সবার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে।”
জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, “হাসপাতালভিত্তিক নিবন্ধন চালু হলে প্রত্যেক নারীকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে, যা এসডিজি ১৬.৯ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এবং সঞ্চালনা ও উপস্থাপনা করেন সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর মাশিয়াত আবেদিন।
- এসআইবি/এমআই

