রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুদৃষ্টি চান প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আট বছর পার হলেও মিয়ানমার এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি— এটি গভীরভাবে উদ্বেগজনক।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) মানবাধিকার দিবস-২০২৫ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসন এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মানবাধিকার সংকট। তাই এর সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, আট বছর ধরে লাখো রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতা ও মানবাধিকার রক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কিন্তু মিয়ানমারের টালবাহানা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এক ইঞ্চিও এগোয়নি। তিনি দ্রুততম সময়ে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ তৈরির আহ্বান জানান।
জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও বাংলাদেশ একই অবস্থান তুলে ধরেছে বলে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ছাড়া আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার সুরক্ষা সম্ভব নয়।
বাণীতে তিনি আরও বলেন, মানবাধিকারকে বিশ্বাসের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই বাংলাদেশের অঙ্গীকার। তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর অগ্রগতি হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সব মূল মানবাধিকার চুক্তিতে যোগ দিয়ে বৈশ্বিক মানবাধিকারের মানদণ্ড রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা গাজাসহ বিশ্বের যেকোনো স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানান।
তিনি বলেন, মানবাধিকার দিবসের এ প্রতিপাদ্য— ‘মানবাধিকার, আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য’— বাংলাদেশের বর্তমান অভিযাত্রার সাথেই সবচেয়ে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ। মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার সংগ্রামে বাংলাদেশ অটল থাকবে।
এমএইচএস

