গণতন্ত্রের পথে নতুনভাবে যাত্রা শুরুর সন্ধিক্ষণে দেশ : রিজওয়ানা
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ না হওয়াতেই বারবার গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনের জন্ম হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যেখানে পুরোনো শাসনব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে নতুনভাবে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে।’
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা আশাবাদী। এই নির্বাচন কেবল একটি ভোটের আয়োজন নয়, বরং সংস্কার প্রশ্নে জনগণের মতামত জানার সুযোগ তৈরি করবে। জনগণের সেই মতামতের ওপর ভিত্তি করেই গণতন্ত্রের যাত্রা এবার ভিন্ন ও পরিবর্তিত রূপ নিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫৪ বছর পরও যদি গণঅভ্যুত্থান প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে ১৯৭১ সালের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা রাষ্ট্র পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে এমন একটি ভিত্তি গড়ে উঠবে, যা একদিকে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে, অন্যদিকে সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহির মধ্যে রাখবে। বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্ন এখনো অধরা থাকলেও সেই লক্ষ্যে এগোনোর সুযোগ তৈরি হবে ।
রাজনীতিতে সহিংসতার সংস্কৃতির সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিপক্ষকে যুক্তি বা তর্কের মাধ্যমে মোকাবিলা না করে হত্যাচেষ্টা বা সহিংসতাকে হাতিয়ার হিসেবে নেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় ও কাপুরুষোচিত। জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সাহসই গণতান্ত্রিক রাজনীতির আসল শক্তি। নতুন বাংলাদেশে এই সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির কোনো স্থান নেই।’
জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় রাষ্ট্র ছিল ভেঙে পড়া অবস্থায়। সেই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রকে আবার কার্যকর পথে ফেরানোই ছিল প্রধান কাজ। তাই এক বা দেড় বছরের সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা প্রচলিত মানদণ্ডে বিচার করা ঠিক হবে না। সরকারের মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা।’
নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, স্বাভাবিক প্রস্তুতি থাকলেও সাম্প্রতিক হামলা ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিপক্ষ সংগঠিত হয়ে পেছন থেকে আঘাত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব মোকাবিলায় সরকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করছে।
নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, সরকারের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা। নির্বাচন ব্যাহত করতে একটি শক্তি সক্রিয় থাকলেও তা প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জনগণকে ভীত করার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনগণকে আশ্বস্ত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি না হয়।’
সাইফুল ইসলাম শাওন/এনএ

