নিরাপত্তা ঝুঁকি
দিল্লির পর আগরতলা ও শিলিগুড়িতেও বাংলাদেশের ভিসা সেবা বন্ধ
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:১৯
ছবি : সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীর হামলার মুখে কনসুলার ও ভিসা সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর ২০২৫) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মিশন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (বিএইচপি) ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডিইউডিজিটাল’-এর অফিসে ভাঙচুর চালায়।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই অফিসের তালা খোলা যাবে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে সোমবার বেলা ৩টার আগেই ভিসা কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়ে কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে।
এদিকে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া এবং ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই দুই মিশনেও সব ধরনের কনসুলার সেবা স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই মিশনগুলোর সামনে এ সংক্রান্ত নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পাসপোর্ট ও ভিসাসংক্রান্ত কোনো আবেদন গ্রহণ বা সেবা প্রদান করা হবে না।
এর আগে গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে দিল্লির চাণক্যপুরীতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে চরমপন্থী সংগঠন ‘অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনা’ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে হত্যার হুমকি দেয়। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “দিল্লির মতো সুরক্ষিত কূটনৈতিক এলাকায় কীভাবে উগ্রপন্থীরা প্রবেশের সুযোগ পেল, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। হাইকমিশনার ও তাঁর পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা স্বাগতিক দেশ তথা ভারতের দায়িত্ব। কিন্তু দিল্লিতে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে বলে ঢাকা মনে করছে। যদিও ভারত সরকার এই ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে দাবি করেছে, তবে ঢাকা তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বর্তমানে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। একের পর এক হামলার ঘটনায় ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এমএইচএস

