
সাংবাদিকতা সমাজের প্রতিচ্ছবি। পেশাগত কাজের বিপরীতে শত্রুতা তৈরি হওয়ায় হত্যা, নির্যাতন ও মারধরের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
প্রতিনিয়তই সাংবাদিকরা রাষ্ট্র ও সন্ত্রাসীদের ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাংবাদিক হত্যার ঘটনাগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে জানানো হচ্ছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তথ্যমতে, শেখ হাসিনার শেষ সময়ে দেশে প্রায় ৫০০ জন সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন।
চলতি বছরে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী— এখন পর্যন্ত অন্তত ১২৬ জন সাংবাদিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারী সাংবাদিক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মানবাধিকার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ৩৩টি ঘটনায় ৯৬ জন সাংবাদিক নানাভাবে হামলা, আইনি হয়রানি, হুমকি, হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
শুধু আগস্ট মাসেই আক্রান্ত সাংবাদিকের সংখ্যা জুলাই মাসের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা পুরো সাংবাদিক সমাজকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।
দুর্নীতি উন্মোচন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার ও নিষ্পত্তির মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়া আদালত, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাংবিধানিক দায়িত্ব, যা করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে সরকার।
এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সাংবাদিকদের সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা।
পাশাপাশি সাংবাদিকদের আত্মরক্ষার্থে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়াও এখন সময়ের দাবি।
লেখক : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; সিনিয়র সহসভাপতি, কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন; পরিচালক, আইন ও গণমাধ্যম, যুব অর্থনীতিবিদ ফোরাম, বাংলাদেশ
- বাংলাদেশের খবরের মতামত বিভাগে লেখা পাঠান এই মেইলে- bkeditorial247@gmail.com