“রাজনীতি” ছোট্ট একটি শব্দ, তবে পৃথিবীটা চলছে রাজনীতির ভিত্তিতেই। রাজনীতি হলো রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি। রাজনীতি কতৃত্ব ও ক্ষমতার ভিত্তিতে সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গঠিত। রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার্থে রাজনীতির ভূমিকা সর্বোচ্চ কারণ রাষ্ট্রের পরিচালনা নীতিই হলো রাজনীতি। রাষ্ট্রের স্বার্থ সকল রাষ্ট্র বাসীর কাছেই সবচেয়ে মূল্যবান ও প্রধান।
রাজ্য পরিচালনার মূল নিতী হলো রাজনীতি এবং যেকোন ধর্মের দৃষ্টিতে রাজনীতি অত্যন্ত গূরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর এই আদিও ভিত্তি রাজনীতির গূরুত্বপূর্ন অধ্যায় সম্পর্ক।
গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একেকজনের একেক রকমের দর্শন থাকে, বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতবাদ থাকায় হলো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চার প্রধান উপাদান। উধারণ স্বরূপ যেমন “আপনি কাপড় ধোবেন সেটা আপনি নিজে হাতেও ধুইতে পারেন আবার কাপড় পরিস্কার করার জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মাধ্যমেও ধুতে পারেন, কাপড় লন্ড্রীতে দিয়েও ধুয়ে নিতে পারেন আবার বাড়িতে কাজের লোক রেখেও ধুয়ে নিতে পারেন। মূল বিষয় হলো কাপড় পরিস্কার হওয়া।” গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চাও ঠিক অনেকটা এমন দেশের মঙ্গলজনক চিন্তাকে অক্ষুন্ন রেখে কর্মপদ্ধতি ভিন্ন রকম হয় তবে মূল হলো দেশের মঙ্গল করা। দেশের স্বার্থে বা দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনীতি অপরিহার্য। রাজনীতিতে বিভিন্ন দলের বা ব্যক্তির ভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শন থাকতেই পারে সেটা দোষের নয় বরং প্রয়োজন কিন্তু প্রত্যেকের মধ্যে থাকতে হবে একটি সুন্দর সম্পর্ক।
এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ার কারণ হলো শক্তিশালী বিরোধী মত না থাকা ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়া। ২০১৪ সালে বিগত সরকার একতরফা নির্বাচন করার কারনে রাষ্ট্র পরিচালনা প্রতিষ্ঠান সংসদে শক্তিশালী ও সত্যিকারের বিরোধী দল/মত না ছিলোনা। শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতো সেই সিদ্ধান্তে বিরোধ কেউ করতনা। যারা সরকারে ছিলো তারা কোন বিরোধী মতমত বা ভিন্ন মতামত সহ্য করতে পারতনা বরং দমন পীরন করত বিরোধী মতকে।
রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি হলো বিরোধী দল, বিরোধী দল যদি সরকারের সমালোচনা না করে এবং জনগণের মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি হয় তাহলে সেই সরকার হয়ে ওঠে স্বৈরাচারী সরকার।
আমার ব্যক্তিগত মতাদর্শন বা মতামত হচ্ছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এমন স্বৈ রাচারী সরকার আর কখনো তৈরী না হোক এবং এই দেশে আর যাই হোক ভোটাধিকার নষ্ট না হোক। ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়েই জনগণ তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে। বর্তমানের এই পরিস্থিতি তৈরী হতনা যদি সুষ্ঠু ভোটাধিকার ব্যবস্থা থাকত। কারণ ভোটাধিকার থাকলে সত্যিকারের বিরোধী মত থাকত রাজনীতিতে জণগনের কদর থাকত। বিরোধী মত অবশ্যই প্রয়োজন। মানুষ মাত্রই ভুল, যে ভুল করেনা সে মানুষ না।
তাই সরকার ভুল সিদ্ধান্ত নিবে বিরোধী দল তার সমালোচনা করবে,তখন সরকার তার ভুল বুঝতে পারবে এবং জনগণের মতামত কে গূরুত্ব দিবে, জণগনের চাওয়া বুঝবে দেশ ও জাতির স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিবে। বিরোধী মত বা ভিন্নমত মানেই যে তার সাথে যেকোন সরকারি দলের দা কুড়াল সম্পর্ক হতে হবে এমনটি নয়। সরকারি দল ও বিরোধী দলের সম্পর্ক হোক দুজন ভালো বন্ধুর মত, একজন ভুল করলে আরেকজন ধরিয়ে দিবে।
বিগত দিনের সত্যিকারের দোষীদের বিচার হোক শাস্তি হোক, কারণ অন্যায়ের বিচার প্রয়োজন কিন্তু ঢালাও ভাবে বিগত সরকারি দলের সবাইকে প্রতিহিংসার চোখে দেখা উচিৎ নয় বলে মনে করি। দেশের জন্য আমরা সবাই এক কাতারে থাকি, সকলে দেশের স্বার্থে এক মতে থাকি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করি এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি হোক এই দাবি রাখি। আগামীর বাংলাদেশ হোক প্রতিহিংসমুক্ত, ভিন্ন মতের মূল্যায়ন করি। “স্বহিংসতা নয় সম্প্রতি হোক ,এমনই হোক আগামীর রাজনীতি”
লেখক : দপ্তর সম্পাদক, সান্তাহার প্রেস ক্লাব
বিকেপি/এমবি

