Logo

মতামত

নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য আর কতদিন

Icon

রেজাউল করিম খোকন

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৬

নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য আর কতদিন

এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর ঢাকা। যান চলাচলে এই ধীরগতির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশের শহরে গতি কম। অন্যান্য দরিদ্র দেশের তুলনায় বাংলাদেশে গতি কম গড়ে ২০ শতাংশ। নাগরিক গতির একটি নির্ধারক বড় রাস্তা। বড় রাস্তা ভিড় কমায় বিষয়টি এমন নয়, বরং বড় রাস্তা গতি বাড়ায়। দ্বিতীয়ত, শহরে বহু মানুষ কর্মক্ষেত্র, স্কুল ও বিনোদনকেন্দ্রের হাঁটার দূরত্বে বসবাস করে না। তারা দ্রুতগতির এবং বিশ্বস্ত যাতায়াত ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে চায়। আধুনিক মহানগরের প্রয়োজনীয় শর্ত হচ্ছে দ্রুতগতির যান্ত্রিক যান। জটিল উৎপাদন নেটওয়ার্ক ও বিচিত্র ভোগের বর্তমান শহরে হেঁটে যাতায়াতের চিন্তা মধ্যযুগীয়।

 তৃতীয়ত, পরিবার ও সরকার প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করে নগর যাতায়াতের ক্ষেত্রে। কিন্তু একটি শহর ভ্রমণ বা চলাফেরার জন্য কতটা সুন্দর, তা কমই জানা থাকে। নগর- পরিকল্পনাবিদেরা খুব কমই জানেন যে একই  ধরনের শহরের তুলনায় তাদের শহরটি কতটা পিছিয়ে বা কেন পিছিয়ে। মানুষের চলাচল একটি জরুরি বিষয়। শহর গড়ে উঠেছে এ কারণে যে অল্প জায়গায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদনের সুবিধা থাকবে। মানুষ দ্রুত চলাচল করে সেই সুবিধা নিতে পারবে। ঢাকায় দ্রুত চলাচলের সুবিধা নেই। দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনার  বদলে স্বল্প মেয়াদে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা এখানে করা হয়েছে। এখন বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা  ছাড়া শুধু উন্নয়ন প্রকল্প দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। ঢাকার ওপর চাপ কমাতে বিকেন্দ্রীকরণ দরকার। শহরে ছোট গাড়ি, রিকশা ও মোটরসাইকেল কমাতে হবে। তা না করে আমরা কাজ করছি উল্টো। এর ফলে বিপুল ব্যয়ে প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা যাচ্ছে না।

রাজধানীর যানজট পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না। সব সড়কেই এখন যানজট আগের মতোই। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে যানজটের ভয়াবহতা বেশি। কথা হলো- রাজধানীর এই নাগরিক দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে, এমন প্রত্যাশা ছিল সবার মধ্যে। এ সমস্যা সমাধানে গত দুই দশকে নানা পরিকল্পনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যেগুলো বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখেছে তা দিয়ে কি প্রকৃত অর্থেই এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব? একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এমন প্রশ্ন যে কারো হতে পারে। তেমনি বিদেশি অনেক বিনিয়োগকারীর দৃষ্টি এখন ঢাকার দিকে। তারা যখন এই শহরে আসা মাত্রই যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন তখন উৎসাহে কিছুটা হলেও ধাক্কা লাগা স্বাভাবিক। এসব বিবেচনায় প্রশ্ন উঠতেই পারে, এটা কেমন শহর! যে শহরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটের কারণে বসে থাকতে হয়। সমস্যা সমাধানে শত ছাপিয়ে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া ছাড়া কি আর কোনো উপায় নেই? যে উপায় পরিস্থিতিকে অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারে। অবশ্যই আছে। বড় বিনিয়োগ ছাড়া যানজট কমাতে যেসব বিকল্প সামনে আছে, সেগুলো দীর্ঘদিন আলোচনার টেবিলেই সাজানো। এসব বিকল্পে সরকার, পরামর্শকসহ দাতা সংস্থার একেবারেই উৎসাহ কম, তা সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু সময়ের বাস্তবতা বলছে, বিপুল অর্থের প্রকল্প না নিয়ে যানজট রোধে বিকল্প ভাবনা অনেক কাজে দিতে পারে। ’৯০ দশক থেকেই রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি নিয়ে বেশি আলোচনা। 

২০০১ সালের পর তা আরও গতি পায়। যানজট কমাতে উন্নয়ন প্রকল্পেই শুধু যানজট কমবে না। এজন্য সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন বিকেন্দ্রীকরণ। অর্থাৎ ঢাকামুখী মানুষের স্রোতে যদি কমানো সম্ভব না হয়, তাহলে যানজট নিরসন একেবারেই সম্ভব হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো- একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও, বিকেন্দ্রীকরণে সরকারের তেমন উদ্যোগ নেই। নগরবাসীকে যানজটের এই মহাদুর্ভোগ থেকে স্বস্তি দিতে সবার আগে জরুরি প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকেন্দ্রীকরণ। উদ্যোগ নিতে হবে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানাগুলোকে যেকোনো মূল্যে নগরীর বাইরে নেওয়ার। নতুন করে শহরে কোনো শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমতি দেওয়া না হলেও এখন সময়ের দাবি পুরানোগুলোকে মফস্বল শহরে নেওয়া। এখন সারা দেশে খুব ভালো যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। তাই পণ্য আনা নেওয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। এতে ঢাকার ওপর অনেকটাই চাপ কমবে। শ্রমিকরাও মফস্বল শহরে আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারবেন। রাজধানীর আশপাশের জেলায় নতুন কোনো শিল্প কারখানারও অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যদি কেউ শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হন তাহলে তা অবশ্যই মফস্বল শহরের জন্য অনুমতি দিতে হবে। বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসও বিভাগীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। অনলাইন-নির্ভর নাগরিকসেবা আরও বেশি বাড়ানো সম্ভব হলে মানুষ কম ঘর থেকে বের হবেন। তাছাড়া নাগরিক সেবায় ভোগান্তি কমিয়ে আনার বিকল্প নেই। নগরীতে যুক্ত হওয়া নতুন এলাকাগুলোতে যেন পরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে সরু রাস্তাগুলো আরেকটু প্রসারিত যেমন করা জরুরি তেমনি নতুন রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে পিছপা হওয়া যাবে না। বস্তিবাসীসহ ছোট ভাসমান বা মৌমুমি ব্যবসায়ীদের একটি অংশকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিজ এলাকায় পুনর্বাসন করা যেতে পারে।

আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়। তা হলো, ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে শুধু পুলিশ দায়িত্ব পালন করে থাকে। আর বাদবাকি রাস্তায় কী হচ্ছে তা দেখার কেউ নেই। যেমন রাস্তায় গাড়ি নষ্ট হয়ে থাকে। রাস্তা দখল করে পার্কিং, মালামাল রাখা, ইচ্ছামতো যাত্রী ওঠানো-নামানো, যাত্রীর জন্য বাসগুলোকে বসে থাকা, যেখানে সেখানে টেম্পো স্ট্যান্ডসহ নানা কারণে সড়কে যানজট লেগে থাকে। অর্থাৎ আইন না মানার প্রবণতা রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। তাই রাস্তায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি আরও বেশি স্থাপন করতে হবে সিসি ক্যামেরাও। কেউ আইন ভঙ্গ করলে সঙ্গে সঙ্গে নিতে হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ট্রাফিক আইনভঙ্গের কারণে কোনো গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা, চালকের পয়েন্ট কাটা গেলেই মানুষ আইন মানতে বাধ্য। এভাবে সবার মধ্যে অল্পদিনের মধ্যেই সচেতনতা সৃষ্টি হবে। তবেই নগরীর যানজট পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক করা হয়ত সম্ভব।

রাস্তায় গর্ত, বাসরুটের বিশৃঙ্খলা, অবৈধ পার্কিং, ট্রাফিক সিগন্যালের বিকল অবস্থা এবং ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মধ্যে একধরনের বিশেষ মিল আছে; এসবের দায়ভার সব সময়ই ‘অন্য কারও’। বাংলাদেশের পরিবহনব্যবস্থার প্রতিটি অংশ- সড়ক নির্মাণ, আইন প্রয়োগ, চালকের লাইসেন্স, যানবাহনের ফিটনেস, নগর-পরিকল্পনা, জরুরি সেবা, জনসচেতনতা- এই সবই বর্তমানে ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতে দেওয়া আছে। কিন্তু কোনো সংস্থা এককভাবে এই বহুমুখী সমস্যাগুলোর সমাধান করার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষমতা, অর্থায়ন বা সমন্বয়ের সুযোগ পায় না। বাংলাদেশের পরিবহনব্যবস্থার বড় সমস্যা হলো অকার্যকর দায়িত্বের বিভাজন। বিআরটিএ ড্রাইভারদের লাইসেন্স দেয় এবং গাড়ি নিবন্ধন করে, কিন্তু তারা রাস্তায় আইন প্রয়োগ করতে পারে না। 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু সড়ক নকশা বা বাস রুট নির্ধারণে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। সিটি করপোরেশন রাস্তা সংস্কার ও ফুটপাত মেরামতের কাজ করে, কিন্তু গণপরিবহন পরিকল্পনা থেকে তারা প্রায়ই বাদ থাকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্ঘটনার পর জরুরি সেবা বা ট্রমা কেয়ার সিস্টেমের কোনো অংশ নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে কোনো ধরনের সচেতনতা বা শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এ অবস্থায় দুর্নীতি ও স্বার্থান্বেষী মহল সহজেই প্রভাব বিস্তার করে। মালিক সমিতি বা শ্রমিক সংগঠনের চাপ, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় আর ঘুষের সংস্কৃতি প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে বারবার বিফল বা স্তিমিত করে। এর ফলে জনগণের জীবন ঝুঁকিতে থেকেও কার্যকর কোনো জবাবদিহি নেই।

এই মুহূর্তে ঢাকা শহরটাকে এক ধরনের নরকে পরিণত করেছে নতুন আপদ  হিসেবে বিবেচিত ব্যাটারিচালিত  রিকশা। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী শহর। এই শহরের সৌন্দর্য, সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, এই শহরের রাস্তায় নির্বিঘ্নে নিরাপদে চলাফেরা, এই শহরের আভিজাত্য, এই শহরের আন্তর্জাতিক মান- সব সবকিছুই ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে এই ব্যাটারিচালিত রিকশা। একসময় এই ব্যাটারিচালিত রিকশা শহরের প্রধান সড়কে চলাচল করতে পারতো না। কেবলমাত্র পাড়া মহল্লার অলি গলিতে চলাচল সীমাবদ্ধ ছিল। বিগত শেখ হাসিনার শাসনামলে এই ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক-মালিকরা মিলে আন্দোলন করে শহরের সব রাস্তায় এগুলোর অবাধ চলাচলের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করলেও তারা শহরের প্রধান সড়কে এই সব ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি পায়নি। তখন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল এদের চলাচল। কিন্তু শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চলা জুলাই আন্দোলনের সময় এই ব্যাটারিচালিত রিকশা কোনো আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে ঢাকা মহানগরীর সব রাস্তায় অবাধে চলাচল শুরু করে দেয়। তখন নিয়ম শৃঙ্খলা ছিল না দেশে। কেউ বাধা দেয়নি তাদের। কিন্তু সেই থেকে এই ব্যাটারিচালিত রিকশা গেড়ে বসেছে যেন, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরের সব প্রধান রাস্তা। এদের দাপটে রাস্তায় অন্যান্য সব যানবাহন ঠিকঠাক মতো চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। অদক্ষ, অপরিপক্ক, অনভিজ্ঞ, উৎশৃঙল চালকের কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। 

এইসব ব্যাটারিচালিত রিকশায় যারা যাত্রী হচ্ছেন তাদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। আজকাল পায়ে প্যাডেলচালিত রিকশা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐ আপদ ব্যাটারিচালিত রিকশা দোর্দণ্ড দাপটে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই যেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তাদের। একধরনের অসহায়ত্ব ভাব ফুটে উঠেছে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়। সবাই দেখছেন, উপলব্ধি করছেন, হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন এই ব্যাটারিচালিত রিকশা অবাধে চলাচলের কারণে সৃষ্ট যানজট, যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ইত্যাদি।  অথচ কেউই কিছু করতে পারছেন না। এর চলাচল শুধুমাত্র পাড়া মহল্লার অলিগলিতে সীমাবদ্ধ থাকার কঠিন আইনের বিধান বলবৎ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এরা ট্যাক্স, ভ্যাট  ছাড়া প্রধান সড়ক গুলোতে  দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। একসময় পুরো রাস্তা যেন তাদের দখলে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। তখন আর কিছু করার থাকবে না। বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ যদি এদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নেয় একসময় আর ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজন হবে না রাস্তায়।

যত বড় কাঠামোই তৈরি করা হোক, তা সফল হবে না, যদি না আমাদের নাগরিক আচরণ বদলায়। বর্তমানে বাংলাদেশের রাস্তায় প্রভাবশালী মানেই জয়ী। লাল বাতি মানা হয় না, অ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকে, পথচারী হয় বিপন্ন। একটি নতুন সড়ক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেখানে পথচারীর অধিকার সংরক্ষিত হবে; অ্যাম্বুলেন্সকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে; শিশুরা নিরাপদে বাইসাইকেল চালাতে পারবে; বয়স্করা নিশ্চিন্তে ফুটপাতে হাঁটতে পারবে; এসব শুধু দুর্ঘটনা কমাবে না, নাগরিক জীবনে সহমর্মিতা ও আস্থাও ফিরিয়ে আনবে। রাষ্ট্রকে কখনো না কখনো ভাবতেই হয়, নগরের সড়ক এবং উন্মুক্ত স্থানগুলোয়  নাগরিকদের কী দেওয়া উচিত অথবা সর্বসাধারণের এসব থেকে কি পাওয়ার কথা? আমরা তো আমাদের রাস্তাঘাটকে দৈনন্দিন অবিচার বা নৈরাজ্যের প্রতীক হয়ে থাকতে দিতে পারি না। কিন্তু এই সবই অর্থহীন হবে যদি আমরা বর্তমান  বিশৃঙ্খলতার ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকি। কারণ, দিন শেষে সড়ক ও যানজট আসল সমস্যা নয়- এসবের ব্যাপারে অবজ্ঞাই হলো মূল সমস্যা। এবং আমরা সবাই মিলে এর থেকে বেরিয়ে আসার পথ বেছে নিতে পারি। এটি শুধু যানজট কিংবা সড়কের প্রশ্ন নয়, বিশ্বায়নের এই যুগে এটি আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রশ্ন। সিদ্ধান্ত এখন আমাদের হাতে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক 

বিকেপি/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

যানজট

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর