
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শনিবার (১০ মে) আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে দলটি বিলুপ্ত না করে কেবলমাত্র কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা।
এতদিন দেশে বিভিন্ন সময়ে বহু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ হলেও শুধুমাত্র কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার নজির এই প্রথম।
চলুন জেনে নিই আগেও যেসব দল নিষিদ্ধ হয়েছিল—
১৯৭১ : আওয়ামী লীগ
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনা শাসকরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
জামায়াত, মুসলিম লীগসহ ধর্মভিত্তিক দল
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের তিনটি অংশ, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)সহ সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেন।
১৯৭৫ : বাকশাল গঠন, সব দল বিলুপ্ত
১৯৭৫ সালের ২৫ শে জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করে আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে গঠন করেন বাকশাল।
১৯৭৫-এর পর : সব রাজনীতি নিষিদ্ধ
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর বাকশালের কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করা হয় সামরিক আইনে।
১৯৭৬ : নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মো. সায়েম রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে জোহরা তাজউদ্দিনের নেতৃত্বে পুনরায় সংগঠিত হয় আওয়ামী লীগ। যদিও তা পরে মালেক ও মিজান নামে বিভক্ত হয়।
১৯৭৯ : জামায়াতের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ
তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জামায়াতসহ নিষিদ্ধ দলগুলোর রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেন। তবে সে বছর জামায়াত ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) ব্যানারে ভোটে অংশ নেয়।
১৯৭৪ : সর্বহারা ও কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ
বিশেষ ক্ষমতা আইনে পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি (পিবিএসপি) এবং পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (পিবিসিপি)-কে নিষিদ্ধ করা হয়। এ দুটি সংগঠন এখনো নিষিদ্ধ রয়েছে।
২০০৯ : হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ
উগ্র মতবাদ ছড়ানোর অভিযোগে হিযবুত তাহ্রীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীণ সরকার।
২০০৫ : জেএমবি নিষিদ্ধ
২০০৫ সালে দেশব্যাপী বোমা হামলার পর নিষিদ্ধ করা হয় জঙ্গিগোষ্ঠী জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)।
২০১৩ : হাইকোর্টে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল
আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাইকোর্ট জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে।
২০২৪ : জামায়াত ও শিবির নিষিদ্ধ
শেখ হাসিনার সরকারের শেষ সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
২০২৫: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত আগস্টে জামায়াত ও শিবিরের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
২০২৪: ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ
গত বছরের ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
- এটিআর