Logo

রাজনীতি

সালাহউদ্দিন আহমেদ

জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ না হলে দায় কমিশন ও সরকারের

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ২১:৩৩

জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ না হলে দায় কমিশন ও সরকারের

রাজধানীর পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত মৌন মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি : সংগৃহীত

জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদ প্রণীত না হলে এর জন্য সংস্কার কমিশন, জাতীয় ঐক্য কমিশন এবং এই অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। 

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত মৌন মিছিল–পূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এই মৌন মিছিলের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ওপর অবিরাম দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে। বিএনপির কারণে নাকি সংস্কার হচ্ছে না। বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি ঐকমত্য পোষণের জন্য এগিয়ে আসছে।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা আজ সংস্কার কমিশনে গিয়ে আলোচনা করছে, খানাপিনা খাচ্ছে, সন্ধ্যাবেলায় চলে যাচ্ছে এবং কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না, তারা কারা। তারা কেউ ১৩ দল, কেউ ১৪ দল, কেউ বিভিন্ন রকমের দল, যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে সংযোগে ছিল। তাদের বক্তব্য শুনে যদি সংস্কার কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, জাতির জন্য দুর্ভাগ্য হবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি বলছি না যে ওখানে সবাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল। কিন্তু কিছু কিছু দল ছিল, যাদের ওখানে আহ্বান করা হয়েছে। আমরা মানা করেছিলাম, তাদের সঙ্গে বসে কীভাবে সংস্কারের আলোচনা করব। কিন্তু তাদের নিয়ে আলাপ করছে, খানাপিনা খাচ্ছে, কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়া বেরিয়ে যাচ্ছে। এভাবে আজকে জুলাই মাসের ১৮ তারিখ। জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদ প্রণীত না হলে এর জন্য সংস্কার কমিশন, ঐক্য কমিশন এবং এই অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী থাকবে।’

যারা বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায় অথবা অনিশ্চিত করতে চায়, তারাই জাতীয় নির্বাচনের আগে এই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, যারা বলে পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচন চায়, তাদের উদ্দেশ্য খারাপ।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা হাতপাখা দিয়ে ১৬ বছর আওয়ামী লীগকে বাতাস করেছে, তারা নাকি কোথাও পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন চায় না। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি দল, যে দলটি সব সময় বিভ্রান্তিমূলক রাজনীতি বাংলাদেশে করেছে। একসময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গেছে। আরেক সময় জনগণের বিরুদ্ধে গেছে। আরেক সময় মানুষের সেন্টিমেন্টের (আবেগ–অনুভূতি) বিরুদ্ধে গেছে। তারা সব সময় বিভ্রান্তিমূলক রাজনীতি করে এবার ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যারা নতুন করে বাংলাদেশে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখছেন, এই স্বপ্ন দেখা ভালো। জনগণের ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যই আমাদের সংগ্রাম। কিন্তু মনে রাখতে হবে, কেউ যদি বাংলাদেশের নির্বাচনকে পিছিয়ে দিয়ে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে এবং নির্বাচন না করে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে চায় অথবা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার ষড়যন্ত্র করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন আবার পুনর্বাসিত হয়।’

বিভিন্নভাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘লক্ষ করছি, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিসমূহে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সুতরাং আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে মৌন মিছিল–পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তাফা জামান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রমুখ। 

সমাবেশ শুরুর আগে বেলা তিনটা থেকে মিরপুরের পল্লবীতে বিআরটিসির বাস ডিপোর সামনে জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি মিরপুর–১১ নম্বর, মিরপুর–১০ নম্বর, কাজীপাড়া হয়ে শেওড়াপাড়ায় এসে শেষ হয়।

  • এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জুলাই অভ্যুত্থান বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর