Logo

রাজনীতি

আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না : সারজিস

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪২

আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না : সারজিস

টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মিডিয়াকে দেখতে চাই না। মিডিয়া প্রপাগান্ডা ছেড়ে তাদের অংশ হিসেবে কাজ না করুক। ২৪ পূর্ববর্তী কয়েকটি মিডিয়া অন্ধের মতো একটি দলের দালালি করেছে। তাদের সংবাদকর্মী যেসব মিডিয়াতে কাজ করে, আজকে তারা সেটা বলতেও লজ্জা পায়। আমরা চাই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো মিডিয়ার এমন করুণ দশা না হোক।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রশাসনকে উদ্দেশ করে সারজিস আলম বলেন, ২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাংলাদেশের জন্য দেখতে চাই। দেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা প্রশাসনকে কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে দেখতে চাই না। কোনো দল বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য দেখতে চাই না।

এনসিপির মুখ্য সংগঠক বলেন, টাঙ্গাইলে মারুফ হত্যার আসামিদের ধরার তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করিনি। এখনো টাঙ্গাইলের কিছু ব্যক্তি, কিছু দল, কিছু গোষ্ঠী জুলাই-আগস্টের নিহতদের বিচারকে সামনের দিকে না নিয়ে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা মামলা বাণিজ্য করছে। আমরা চিনে রাখছি কারা এ মামলা বাণিজ্য করছে। 

তিনি বলেন,  গণঅভ্যুত্থানের সময়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিল। এ জন্য ওই সময় আমাদের কিছু সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হয়েছিল। কিন্তু এখন আমরা প্রত্যেকটা পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করছি। কোন মিডিয়া কার হয়ে কাজ করছে, কোন প্রশাসন জনগণের উদ্দেশ্য সার্ভ না করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য সার্ভ করছে, সেটা আমরা দেখছি। 

সারজিস আলম বলেন, আমাদের কাছে চাঁদাবাজির একটাই পরিচয়—তারা চাঁদাবাজ। এ বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি চাঁদাবাজকে প্রটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে তাকেও চাঁদাবাজির ভাগিদার হিসেবে বিবেচিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে তাদের পছন্দের জেলা ব্যতীত বাকি জেলাগুলোকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই টাঙ্গাইল জেলা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোর একটি হতে পারত। কিছু দলীয় স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে এত বড় একটি ঐতিহ্যবাহী জেলার স্বার্থকে বিসর্জন দিতে হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, দেশের বাইরেও এই টাঙ্গাইল ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের পরিচিতি রয়েছে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এই তাঁতশিল্প ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গেছে। 

সারজিস আলম বলেন, এই দেশে শুধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অথচ মানুষ যাদের দেখে রাজনীতি শিখবে—এ কে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো মানুষদেরকে এক কোণে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভাসানীর মতো মানুষদের ইতিহাস থেকে এক কোণে রাখা সম্ভব না। 

তিনি বলেন, ভাসানী হল থেকে সারাদেশে সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়তে পারত। অথচ শুধুমাত্র একজন মানুষকে পূজা করতে এসব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী ভাসানী হল এখন মাদকের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। কিছু জেলায় হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ টাঙ্গাইলের যমুনা পাড়ের মানুষদের জন্য তেমন বরাদ্দ আসেনি। বরং যা এসেছে, তা তাদের নেতাকর্মীরা লুটপাট করে খেয়েছে।

সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানী, টাঙ্গাইল জেলার মুখ্য সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে তারা টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসের সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থল শহীদ মিনার চত্বরে আসেন।

রেজাউল করিম/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জাতীয় নাগরিক পার্টি সারজিস আলম

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর