নির্বাচনী আচরণবিধির খসড়ায় যেসব মতামত দিল বিএনপি
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৪৩

রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা- ২০২৫ খসড়ার প্রায় সকল বিষয়ে একমত পোষণ করলেও কিছু বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছে বিএনপি। এসব মতামতের মধ্যে নির্বাচনী সভা, হেলিকপ্টার ব্যবহার, ধর্মীয় উপসনালয় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো রয়েছে। আচরণবিধিমালা- ২০২৫ খসড়ায় বিএনপির মতামত প্রদানের একটি অনুলিপি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। অনুলিপিটি বাংলাদেশের খবরের হাতে রয়েছে।
অনুলিপি থেকে জানা যায়, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির খসড়ায় বলা হয়েছে, নির্বাচনকালীন জনসভার দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে জনসভার ২৪ ঘণ্টা আগে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করতে হবে।’
এ বিষয়টির ওপর বিএনপি নিজস্ব মত ব্যক্ত করে বলছে, ‘নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পূর্বে প্রার্থী কর্তৃক নির্বাচনী প্রচারণার রোডম্যাপ প্রদান করতে পারে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা সমন্বয় করতে পারে। এই পদ্ধতি নির্বাচনী প্রচারণায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে।’
নির্বাচনী প্রচারণায় হেলিকপ্টার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নিজস্ব মতামত দিয়েছে বিএনপি। আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনী প্রচার কার্যে হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাইবে না। তবে দলীয় প্রধানের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে পারবে, কিন্তু যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচার সামগ্রী প্রদর্শন বা বিতরণ করতে পারবে না।’
এ বিষয়ে বিএনপি একটি দলের শীর্ষ দু’জনকে (দলীয় প্রধান/ভারপ্রাপ্ত প্রধান, মহাসচিব) হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে।
আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে না।’ এ বিষয়ে বিএনপির নিজস্ব মতামতে বলা হয়েছে, ‘মন্দির’ শব্দের পরে ‘ক্যায়াং (প্যাগোডা)’ শব্দদ্বয় যোগ করতে হবে।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, প্রার্থী কিংবা দলীয় নেতাদের চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সকল প্রকার ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো এবং প্রচারণা নিষিদ্ধের বিষয়েও মতামত দিয়েছে দলটি। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় একইসঙ্গে তিনটি মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহারের আচরণবিধির বিষয়ে নির্বাচনী জনসভার ক্ষেত্রে বিষয়টি শিথিলযোগ্য চেয়ে মত প্রকাশ করেছে বিএনপি।
চলতি বছরের ৩০ জুন ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা-২০২৫’ শীর্ষক খসড়া প্রকাশ করে মতামত চেয়ে (খসড়ার ওপর ) আহ্বান জানায় ইসি। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় এক মাসের মধ্যে ৪২টিরও বেশি মতামত জমা পড়ে। এর মধ্যে বিএনপি, বাংলাদেশ জাসদ, বিকল্পধারা, ইসলামী ঐক্যজোটসহ অন্তত আটটি রাজনৈতিক দল এবং টিআইবি, আইইডি-র মতো কয়েকটি সংস্থা ও ২৯ জন ব্যক্তি মতামত দিয়েছেন। গ্রহণযোগ্য মতামতের ওপর ভিত্তি করে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের নবম সভায় ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা- ২০২৫’ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে আমরা অনেক মতামত পেয়েছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করেছি। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। তিনি আরও জানান, নির্বাচনী আচরণবিধির খসড়ায় না থাকলেও আচরণবিধিতে এআই ব্যহারের বিষয়টি যুক্ত হচ্ছে।
- এসআইবি/এটিআর