Logo

রাজনীতি

জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে : রাশেদ খান

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২১:৩৮

জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে : রাশেদ খান

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। ছবি : সংগৃহীত

জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।

বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টা ৪৫মিনিটে জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের রোডম্যাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

লিখিত বক্তব্যে রাশেদ খান বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৬ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ইত্যাদি...’ ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে বাতিল হওয়া কোটার অংশবিশেষ (৩০%) হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে ফিরে না এলে, নতুনভাবে আন্দোলনের সূচনা হতো না। এখানে দুর্নীতি প্রতিরোধ বা অন্য কোনো দাবিতেও আন্দোলন শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট কোটা সংস্কার আন্দোলন। কিন্তু এই আন্দোলনের ইতিহাস বাদ দিয়ে মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, গণঅধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস বাদ দিতে পরিকল্পিতভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি বড় ধরনের অপরাধ। জুলাই ঘোষণাপত্রের এই ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে মিথ্যা শেখাবে। ঠিক ১৯৭১ নিয়ে যেভাবে আমাদের মিথ্যা শেখানো হয়েছে। তাহলে আওয়ামী লীগের তৈরি ইতিহাস ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তৈরি ইতিহাসের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

রাশেদ খান আরও বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৭ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাহিনী রাজপথে নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে, কিন্তু জাতিসংঘ বলছে এই সংখ্যা ১৪০০-এর বেশি, সরকারি গেজেটেড শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ জন। তাহলে কি আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের শহীদের সংখ্যার মতো জুলাইয়ের শহীদের সংখ্যা নিয়েও রাজনীতি করব? কেন ৬ শহীদের লাশ ১ বছর ধরে ঢাকা মেডিকেলে পড়ে থাকে? কেন গণকবর দেওয়া শহীদের পরিচয় আজও চিহ্নিত করা গেল না? আবার যে ফ্যাসিবাদী বাহিনীর কথা বলা হচ্ছে, এই বাহিনীর যারা ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালিয়ে বিপ্লবীদের হত্যা করেছে, তাদের কেন আজও গ্রেপ্তার করা হলো না? এই বাহিনীগুলোর আজও সংস্কার হলো না?

তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৮নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, গণভবনমুখী জনতার উত্তাল যাত্রার মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়-হাসিনা কি সত্যিই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়? আজও আমরা জানি না, কীভাবে হাসিনা ভারতে চলে গেল? সেসময়ই তাকে গ্রেপ্তার করা জরুরি ছিল। সে এত মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। তার বিচারের জোরালো দাবি করা হয়। কিন্তু যার নির্দেশে এত প্রাণ ঝরে গেল, এত রক্ত, এত পঙ্গুত্ব, তার বিরুদ্ধে শুধু রায় ঘোষণা করে দিলেই কি বিচার সম্পন্ন হয়ে যাবে? হাসিনাকে শতবার ফাঁসিতে ঝোলালেও শাস্তি কম হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, পরিকল্পিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ সেনা অফিসারের হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি স্থান পায়নি। এসব ঘটনা এই প্রজন্মের মস্তিষ্ক ও মনস্তত্ত্বে বিপ্লবের বীজ বপন করে ও তারুণ্যকে বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করে। কিন্তু কেন ও কোন উদ্দেশ্যে তারুণ্যের এই সংগ্রামকে জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হলো না?

গণঅধিকারের এ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এতে ১/১১ সৃষ্টির ধোঁয়াশা কেটে গেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।

এতে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাডভোকেট সরকার নূরে এরশাদ সিদ্দিকী প্রমুখ।

  • ডিআর/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

গণঅধিকার পরিষদ নুরুল হক নুর জুলাই অভ্যুত্থান

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর