জুলাই সনদের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা জাতীয় মতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে : ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৫৪
---2025-08-13T175351-689c7cf4bd4e6.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় মতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
যেহেতু একটা জুলাই বিপ্লব হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে যে প্রত্যাশার আলোকে সেই প্রত্যাশার আলোকে এখানে জুলাই সনদ হবে। সনদের আইনি ভিত্তি হবে। সেই সনদের আলোকে নির্বাচন হতে হবে। এটা আমাদের প্রধান দাবি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা বলেছি যে এই নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনে হতে হবে। যাতে জনগণের শতভাগ ভোটের মূল্যায়িত হয় এবং নির্বাচন সুষ্ঠ নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ হয়। এটা ছিল আমাদের মৌলিক দাবি। আর আমরা বলেছি যে স্থানীয় নির্বাচন তো আগে হওয়া প্রয়োজন যাতে নাকি লেভেল প্লেইং ফিল্ড কতটুকু আছে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু সভ্য হয়েছি এটা যাতে প্রমাণ হয়।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি এই যে সংস্কার কমিশন ঐক্যমত কমিশন তার আসলে স্থানীয় নির্বাচনের ব্যাপারে কংক্রিট কোন আইন এখনো পর্যন্ত তারা উপস্থাপন করতে পারে নাই। এটা আমাদের জন্য একটি ব্যর্থতার বিষয়।
আতাউর রহমান বলেন, সর্বশেষ আমরা বলেছি যে আপনি (সিইসি) যদি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবেন তাহলে আপনি নির্বাচন দেন। আর যদি আপনি মনে করেন সুষ্ঠ গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবেন না তাহলে আপনি ঝুঁকি নিবেন না। কারণ যদি আপনি সুষ্ঠ গ্রহণযোগ্য না দিতে পারেন তাহলে বিগত নির্বাচন কমিশনের পরিণতি আপনাকে ভোগ করতে হবে। আপনার গলায় গামছা এবং মাজায় রশি লাগতে পারে। এবং আমরা স্পষ্ট বলেছি যে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হওয়ার আগে ডিক্লেয়ার হওয়ার আগে আপনি তফসিল ঘোষণা করবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে বিষয়টা মনে হয়েছে যে এটা একটু ব্যতিক্রম হয়েছে যে জুলাই সনদের জন্য যে সময় রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় আছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা চলছে। এটা চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা তিনি নির্বাচনের একটা ডেট ঘোষণা করে দিলেন। এতে করে আমরা মনে করি যে এই জুলাই সনদের এই জাতীয় মতের বিষয়টাকে উনি অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছেন।
তারা দলের পক্ষ থেকে সাত দফা লিখিত তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো
১. বিগত ক্ষমতাসীন দলগুলো যেভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে দলীয় এবং ক্ষমতার অশুভ প্রভাব খাটিয়ে বিতর্কিত ও ব্যর্থ করেছে তা থেকে উত্তরণের জন্য সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
২. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্বশীল এবং দলনিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য প্রশিক্ষণ ও দিক নির্দেশনা দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দেশের গৌরব সেনাবাহিনীকে শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয় বরং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনা সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে ও সংস্কারের ভিত্তিতে জাতীয় এবং সকল স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে।
৫. শতভাগ জনমতের মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদ গঠনের লক্ষ্যে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
৬. ফ্যাসিস্ট, খুনি, মানবতা বিরোধী অপরাধী ও আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ট আওয়ামীলীগ ও তার সকল দোসর ও সহযোগী দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
৭. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, টেন্ডারবাজ ও খুনিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
- এসআইবি/এমআই