নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য: হেফাজতে ইসলাম

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯
-68bd114b1d49f.png)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানোর ঘটনাকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে হেফাজতে ইসলাম। একই সঙ্গে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে তারা।
গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামে লাশ পোড়ানো নিষিদ্ধ। এটি মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন। ইসলাম-প্রদত্ত এই মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। ফলে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কাজ। একটি অন্যায় রোধ করতে গিয়ে আরেকটি অন্যায় করার সুযোগ নেই।
তবে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার দলমত–নির্বিশেষে ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে হেফাজত। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসন নুরাল পাগলার ব্যাপারে যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি বলেই এমন সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতে পেরেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজত।
গতকাল শুক্রবার গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেন। হামলায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন এবং নিহত হন একজন।
হামলার এই ঘটনা নিয়ে হেফাজতের শীর্ষ দুই নেতার বিবৃতিতে বলা হয়, কাবার আদলে ১২ ফুট উঁচু নুরাল পাগলার মাজার ও বেদি নির্মাণ, নিজেকে ইমাম মাহাদি দাবি ও নিজস্ব কালেমার প্রচলন ইত্যাদি শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক দিন ধরে রাজবাড়ীর স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। নুরাল পাগলার পরিবারকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও বিফল হন। এমনকি নুরাল পাগলার এসব অপকর্ম রোধে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করে স্মারকলিপি দেন এবং সংবাদ সম্মেলনও করেন। এতে তাঁদের ধৈর্যের পরিচয় পাওয়া গেলেও প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা নুরাল পাগলার কথিত কাবার আদলে তৈরি কবর ভেঙে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়।
হেফাজতের আমির ও মহাসচিব বিবৃতিতে বলেন, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার ও প্রশাসন প্রায়ই করিৎকর্মার পরিচয় দেয়। বাম ও প্রগতিশীল ঘরানাও খুবই সরব থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এলে তাদের সব সময় নিষ্ক্রিয় ও নীরব দেখা যায়। এই বৈষম্য ইসলামবিদ্বেষপ্রসূত বলে মনে করেন তাঁরা।
হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়, একশ্রেণির বাম ও প্রগতিশীলদের নৈতিক সমর্থনের কারণে তাদের ঘরানার কেউ কেউ বিভিন্ন সময় আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর নামে কটূক্তি ও বিষোদ্গার করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। কিন্তু শত প্রতিবাদেও তাদের কোনো বিচার হয়নি। এই দীর্ঘ অবিচারের সংকট নিরসনে সরকার এবং একই সঙ্গে বাম-প্রগতিশীল ঘরানার মুরব্বিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। দায়িত্ব শুধু আলেমদেরই নয়, তাঁদেরও রয়েছে।
আইএইচ/