• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
মাশরাফিকে হীরার টুকরা বললেন শেখ হাসিনা

সুধাসদন থেকে গতকাল ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সঙ্গে মাশরাফি

ছবি : বাসস

রাজনীতি

চার জেলায় ভিডিও কনফারেন্স

মাশরাফিকে হীরার টুকরা বললেন শেখ হাসিনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং আবারো জনগণের সেবা করার সুযোগ দিতে নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে  পুনর্নির্বাচিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী, জয়পুরহাট, নড়াইল ও গাইবান্ধা জেলায় নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। জনসভায় এসব জেলায় নৌকা ও মহাজোট প্রার্থীদের সঙ্গে জনগণের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন শেখ হাসিনা।

বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, ‘মুজিব কোট ও নৌকার ব্যাজ পরে ভোটের দিন সহিংসতার ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। তারা (বিএনপি) এখন নির্বাচনে হয় কারচুপি, না হয় বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির একেকজন অগাধ সম্পত্তির মালিক। মানি লন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি, এতিমের অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন পন্থায় তারা এত টাকা কামাই করেছে। বিএনপি-জামায়াত  জোটের টাকার কোনো অভাব নেই। তারা (বিএনপি) এক একটি সংসদীয় আসনে তিন থেকে চারজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। এর মানে হচ্ছে, যে যত বেশি টাকা দেবে সে মনোনয়ন পাবে।’

তিনি বলেন, ‘তারা একটা জিনিসই পারে, প্রতিপক্ষের ওপর দোষ চাপাতে। ইতোমধ্যে আমাদের অনেক নির্বাচনী অফিস তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের কর্মীদেরও হত্যা করেছে। তারা (বিএনপি-জামায়াত) নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে ধানের শীষে ভোট দেওয়া ও ভোটকেন্দ্রে  গোলমালের মতো ঘটনা এর আগের বিভিন্ন নির্বাচনেও (পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, উপনির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে) ঘটিয়েছে। তারা সিল মেরে আওয়ামী লীগের নাম দিয়েছে।’

আগের দুই দিনের প্রচারণার ধারাবাহিকতায় গতকাল তৃতীয় দিনে শেখ হাসিনা যুক্ত হন চার জেলার সঙ্গে। সুধাসদন প্রান্তে যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার নির্বাচনী জনসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন শেখ হাসিনা। নৌকার এ প্রার্থীকে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন ‘হীরার টুকরা’ বলে।

তিনি বলেন, ‘মাশরাফি একটা হীরার টুকরা। একটাই হীরার টুকরা নড়াইল থেকে আমরা নিয়ে এসেছি। আবার নড়াইলে দিলাম। আপনারা ভোট দিয়ে মাশরাফিকে জয়যুক্ত করবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আগামীতে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হবে, ইনশাল্লাহ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাশরাফি তার পায়ের ব্যথার জন্য নড়াইলে যেতে পারেনি। তাকে আমার কাছে রেখেছি। এর আগে নড়াইলের দুটি আসন থেকে আমি নির্বাচন করেছিলাম। এবার নড়াইল-১ আসনে বিএম কবিরুল হক মুক্তিকে ও নড়াইল-২ আসনে মাশরাফিকে দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছি। আপনারা উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।’

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন মাশরাফি। নড়াইলবাসীর উদ্দেশে মাশরাফি বলেন, ‘আমাকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর সম্মান ও সমবেদনা প্রদর্শন করি। আমার পায়ের ব্যথার জন্য নড়াইলে আসতে দেরি হচ্ছে। আমি অচিরেই এসে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে নৌকায়  ভোট চাইব।’

রাজশাহী সিটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য রাজশাহীর মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীর মানুষের উন্নয়নের জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ এরই মধ্যে নিয়েছি। রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট নির্মাণ, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামীতেও রাজশাহীর উন্নয়ন হবে। রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামও করা হবে।’ আগামীতে আরো উন্নয়নের জন্য রাজশাহীর ছয়টি আসনেই নৌকা ও মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে বাংলা ভাইয়ের জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। তারা প্রকাশ্যে মানুষ খুন করেছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে। কিন্তু এই রাজশাহীতে এখন শান্তি বিরাজ করছে। রাজশাহীতে কর্মসংস্থান, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে দৃষ্টি রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত আমরা ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যেন সাড়ম্বরে উদযাপন করতে পারে, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সে সুযোগটাই যেন জনগণ করে দেন।’

শেখ হাসিনা গাইবান্ধা ও জয়পুরহাটের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে তার পৃথক ভাষণে নিজেদের মধ্যকার সব  ভেদাভেদ ভুলে নৌকা ও মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে তুলে ধরারও আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads