‘পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন না করলে দেশে নতুন করে ফ্যাসিস্ট ফিরে আসবে’

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৭
-68d2a74713869.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কার, বিচার এবং পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন অবশ্যই আয়োজন করতে হবে। না হলে আবার বাংলাদেশে নতুন করে ফ্যাসিস্ট শাসন ফিরে আসবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি গভীর সংকটে নিমজ্জিত এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ন্যায়বিচার অনুপস্থিত থাকার কারণে দেশকে একদলীয় কর্তৃত্ববাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংবিধানসম্মত পথ হচ্ছে-জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নির্বাচন আয়োজন করা। এজন্য পি আর পদ্ধতি চালু করা ছাড়া বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শহীদ খোকন পার্কে ইসলামী আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয়করণের মাধ্যমে দেশে একদলীয় কর্তৃত্ববাদ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নির্বাচন আয়োজন করা।’
তিনি আরও বলেন, পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ছোট-বড় সব দলই সংসদে আনুপাতিকভাবে প্রতিনিধিত্ব পাবে। এটি জাতীয় ঐক্য এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। সংসদীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন রাখতে হবে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণ থেকে মুক্ত করতে হবে। জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচারকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ আমাদের জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার। এটি ছিল রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য জনগণের সঙ্গে করা প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। তাই আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।’
সিনিয়র নায়েবে আমীর বলেন, ‘আমরা জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। এ দেশ কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে আমরা ঘরে বসে থাকব না। ইসলামী আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করবো, ইনশাআল্লাহ।’
মুফতী ফয়জুল করীম আরও বলেন, ‘আমরা কারো আদর্শ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা আল্লাহ এবং আল্লাহর রসূলের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাই। মদিনার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হলে আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি পাবো ইনশাআল্লাহ।’
বিশেষ অতিথি আল্লামা আব্দুল হক আজাদ বলেন, ‘জুলাই মাসে যে অঙ্গিকার জাতীয় জীবনের সামনে উপস্থাপিত হয়েছিল, তা শুধুমাত্র কাগজে লেখা প্রতিশ্রুতি নয়। এটি মানুষের রক্ত ও ঘামে অর্জিত আশা। অঙ্গিকার বাস্তবায়ন হলে রাজনৈতিক মেরুকরণ কমবে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ খুলে যাবে। জনগণ প্রস্তুত, আর তখনই আমরা বলতে পারি—নির্বাচনের জন্য আর অপেক্ষা নয়।’
জেলা সভাপতি আ.ন.ম. মামুনুর রশীদ সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিকের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ, বগুড়া জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মীর মাহমুদুর রহমান চুন্নু, জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক মুফতী এমদাদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক জিয়াউর রহমান জিয়া, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ সোহরাব হোসেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সভাপতি ফরহাদ হোসেন মন্টু ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সভাপতি নাঈম হাসান প্রমুখ।
জুয়েলে হাসান/এআরএস