নরসিংদী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
নরসিংদী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুকালে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন স্ত্রী নাদিরা মাহমুদ, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
তার মৃত্যু খবর ফেসবুকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে মনজুরুল মজিদ মাহমুদ সাদি। এছাড়া ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থেকে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে ৪ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র ও জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ১৯৫০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস নরসিংদীর মনোহরদীর গোতাশিয়ার বাগানবাড়ী এলাকায়। তার বাবা এম.এ. মজিদ একজন আইনজীবী ও মা নূর বেগম। নূরুল মজিদের দাদা শুক্কুর মাহমুদ ১৯২৩ সালে ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। তিনি বৃহত্তর ঢাকা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ট্রাইব্যুনালের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
রাজনীতিতে তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নরসিংদী-৪ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০৮, ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
তিনি নবম জাতীয় সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, দশম জাতীয় সংসদে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ২০১৯ সালে প্রথমবার ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বার শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।
এমবি