বিএনপির সাবেক মহাসচিবের বাসায় যুবদল পরিচয়ে চাঁদাবাজি!

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:০৪

বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের কাছ থেকে যুবদল পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মরহুম খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী তানজিন হামিদ মিতুলের কাছ থেকে যুবদল পরিচয়ে গত শুক্রবার রাতে ৮০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকার একটি চেক আদায় করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার রাতে কথিত যুবদল কর্মী শাওন (২৫), হাবিব (৩৫), সাজিদ (২২) ও সানি (৩৫) হাতিরঝিলের নয়াটোলা গ্রীনওয়ে এলাকার ৬৫৩ নম্বর বাসার ৪র্থ তলার ৪/বি ফ্ল্যাটে গিয়ে চাঁদা দাবি করে।
তানজিন হামিদ মিতুল জানান, ‘শুক্রবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আমার বড় বোন শারমিন ওয়াদুদ নিপা ফোন করে জানান যে, তার জরুরি ভিত্তিতে এক লাখ টাকা প্রয়োজন। আমি রাত ১১টা ২০ মিনিটে তার বাসায় গেলে দেখি, চার যুবক সেখানে উপস্থিত।’
তিনি বলেন, ‘আমি জানতে চাইলে চাঁদাবাজ শাওন কোমরে থাকা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা এক লাখ টাকা দাবি করে। ভয়ে আমি রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে মগবাজার সিটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে সানিকে দিই এবং আরও ২০ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করি।’
তিনি আরও জানান, ‘পরের দিন শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে তারা আবারও বাসায় আসে এবং ফ্ল্যাট খালি করার জন্য হুমকি দেয়। তারা বলে, আগামী মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট না ছাড়লে আমার বোন ও তার সন্তানদের হত্যা করা হবে।’
তানজিন হামিদ মিতুল অভিযোগ করেন, ‘আমি আমার শ্বশুর খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিচয় দিয়েছি। স্বামী খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু ও দেবর আকতার হামিদ পবনের পরিচয়ও জানিয়েছি। এরপরও তারা আমাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তরা নিজেদের যুবদল কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছে।’
এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অভিযোগটি আমরা হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
উল্লেখ্য, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বিএনপির ষষ্ঠ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা-১ ও মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে ভূমিকার জন্য ২০০৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
তিনি পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদে সরকারদলীয় এবং সপ্তম সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ছিলেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাত দলের লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবেও ভূমিকা রাখেন।
২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময় বেগম খালেদা জিয়া তাকে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব দেন এবং তিনি আমৃত্যু এ পদে বহাল ছিলেন।
২০১১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
এনএমএম/এমএইচএস