ইসিকে জামায়াতের ১৮ দফা দাবি, নভেম্বরেই চায় গণভোট
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:১৯
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ছবি : বাংলাদেশের খবর
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা লিখিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর ১৮ দফা দাবি জমা দিয়েছি। প্রতিটি বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কমিশন আমাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন ও কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমরা তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে আমাদের ১৮ দফা বাস্তবায়ন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, ১৮ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো- জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করতে হবে এবং তা আগামী নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কারণ জনগণকে ভোটের আগে জাতীয় সনদে প্রস্তাবিত কাঠামোগত পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে হবে।
জামায়াতের দাবি, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে টেকনিক্যাল ও নিরাপত্তাজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই গণভোট আলাদা সময়ে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন জামায়াত নেতারা। তারা বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখতে হবে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আগেভাগে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আমরা আগেও দাবি জানিয়েছিলাম। ইসি এখন সেটি বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে, আমরা কৃতজ্ঞ। পোস্টাল ব্যালটে কর্মকর্তারা যেন ভোট দিতে পারেন, সেটাও আমরা জোর দিয়ে বলেছি।’
সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে রাজনৈতিক দলের প্রতীকের বিষয়ে সংশোধন নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সংশোধিত বিধান মেনে নিয়েছি। এখন আবার পরিবর্তনের দাবি করা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘনের সমান। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত।’
তিনি বিএনপির একটি প্রস্তাবের প্রসঙ্গে বলেন, ‘যেকোনো দল বা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এমন নেতিবাচক রাজনীতি চাই না।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘আমরা দেশবাসী ও সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাই— যেকোনো পক্ষপাতমূলক আচরণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে, যেন আগামী নির্বাচন সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।’
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও নির্বাচনকে নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের আন্তরিকতা ব্যক্ত করা হয় বলে জানান তিনি। তবে বাস্তবিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন কমিশন কর্মকর্তারা।
জামায়াতের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. এইচ. এম. হামিদুর রহমান, মতিউর রহমান আকন (মিডিয়া সেক্রেটারি), প্রচার সেক্রেটারি, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির ইসলাম এবং উত্তরের আমির সেলিম।
এসআইবি/এমবি

