গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ গুলিবিদ্ধ ৩, নিহত ১
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৫
সরোয়ার বাবলা। ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি সহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় সরোয়ার বাবলা নামে একজন নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন বায়েজিদ হামজারবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত এরশাদ উল্লাহকে দ্রুত চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তবে বিএনপি বলছে, সরোয়ার তাদের কেউ নন। জনসংযোগে শত শত লোক অংশ নেন।
এর আগে বিকেলে নগরের চালিতাতলী এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেন সরোয়ার। পুলিশ সূত্র জানায়, ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তার প্রতিপক্ষ ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেনকে গুলি করা হয়। এতে এরশাদ উল্লাহ, সরোয়ার ও শান্ত নামের তিনজন গুলিতে আহত হন। তাদের মধ্যে সরোয়ারের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির সরোয়ারের মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বরাতে জানা যায়, মনোনয়ন পাওয়ার পর বিকেলে এরশাদ উল্লাহ হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ গুলি চালায়। এতে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এবং সঙ্গে থাকা আরও দুজনও আহত হন। গুলিবিদ্ধ সরোয়ার বাবলা পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে হামলাকারীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান তিনি।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে এসেছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা গুলি চালায়। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। ঘটনার কারণ ও দায়ীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
বিএনপি মিডিয়া সেল থেকেও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম-৮ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির প্রার্থী জনসংযোগ করার সময় সেখানে শত শত লোক অংশ নেন। সরোয়ার সেখানে অংশ নিলে সন্ত্রাসী দুটি দলের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে তাকে গুলি করা হয়।
চট্টগ্রামে ঘোষিত অন্যান্য আসনের মধ্যে রয়েছেন— চট্টগ্রাম-১ : নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম-২ : সরোয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৪ : কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ : মীর হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ : হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১০ : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ : এনামুল হক, চট্টগ্রাম-১৩ : সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম-১৬ : মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতা এরশাদ উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে দলের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত।

