আমজনতার দলের নিবন্ধন না দেওয়া রাজনৈতিক বৈষম্যের প্রতিফলন : ইশরাক হোসেন
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৪
ছবি : বাংলাদেশের খবর
আমজনতার দলের নিবন্ধন না দেওয়া রাজনৈতিক বৈষম্যের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন।
রোববার (৯ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেকরহমানের দল নিবন্ধনের জন্য আমরণ অনশনের সঙ্গে সংহতি জানানো শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইশরাক বলেন, আমজনতার দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করা জরুরি। রাজনৈতিকভাবে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন দলের নিবন্ধন না দেওয়া রাজনৈতিক বৈষম্যেরই প্রতিফলন। ওয়ান ইলেভেনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হলেও ক্ষমতাসীনদের পছন্দের দলগুলোকে বারবার বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অথচ যারা সত্যিকার অর্থে রাজনীতির মাঠে লড়েছেন, আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমান একজন তরুণ, সক্রিয়, এবং নির্যাতিত নেতা। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ প্রতিটি গণআন্দোলনে তিনি রাজপথে ছিলেন। তার ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে, কিন্তু তিনি পিছু হটেননি। এমন একজন নেতার দলকে যদি নিবন্ধন না দেওয়া হয়, তবে সেটি কেবল প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, রাজনৈতিক পক্ষপাতও বটে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি যেসব নতুন দল নিবন্ধন পেয়েছে, তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ইতিহাস বা সাংগঠনিক কাঠামো নেই। তবুও তারা নিবন্ধন পাচ্ছে, যা জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, আসল বিএনপি, তৃণমূল বিএনপি, কিংবা ভারতীয় জনতা পার্টির আদলে করা দল- এসব নাম শুনলেই বোঝা যায়, এটি রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে কতটা বিচ্ছিন্ন। এমন দলগুলোর কোনো কার্যক্রম নেই, অফিস পর্যন্ত অনেক সময় রান্নাঘরের ভেতরে দেখানো হয়েছে। অথচ তারা নিবন্ধন পেয়ে যাচ্ছে!
ইশরাক দাবি করেন, এসব দলের মধ্যে অনেকেই আদালতের নির্দেশের কথা বলে নিবন্ধন পেলেও, নির্বাচন কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা পূর্ণ শর্ত পূরণ করেনি। তারপরও তারা নিবন্ধন পেল। কিন্তু যারা সত্যিকারের রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছে, যেমন তারেক রহমান, তারা বঞ্চিত। এটা কি ন্যায়সঙ্গত?
ইশরাক হোসেন স্পষ্ট করে বলেন, ‘তিনি কোনো দলের নিবন্ধন বাতিলের পক্ষে নন। বরং তিনি চান, পুরো নিবন্ধন প্রক্রিয়াটাই পুনর্গঠন করা হোক। কমিশনের ভেতরেও কিছু কর্মকর্তার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, যাদের কারণে যোগ্য আবেদনকারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
ইশরাক বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান। কেউ যদি শর্ত পূরণ করে, তাকে নিবন্ধন থেকে বঞ্চিত করা অন্যায়। আবার কেউ যদি শর্ত পূরণ না করেও নিবন্ধন পায়, সেটিও সমান অন্যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো অযৌক্তিক দাবি করছি না। আমরা শুধু বলছি-যারা যোগ্য, যারা রাজনৈতিকভাবে মাঠে আছে, যাদের সংগঠন আছে, তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হোক। আর যারা শুধু কাগজে-কলমে দল, তাদের নিয়ে জাতি বিভ্রান্ত হোক সেটা আমরা চাই না।’
ইশরাক হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আজও পুরোপুরি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচনের পর আপনারা স্বাধীন হবেন।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের মানুষ গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় আছে। তাই নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ায় দলগুলোর নিবন্ধন যাচাই করা, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে আসে।’
- এসআইবি/এমআই

